সকালে ঘুম ভাঙতেই প্রথমে চোখে পড়ল মুষলধারে বৃষ্টি, আকাশ কালো মেঘে ঢাকা, সন্ধ্যে নেমে এসেছে যেন। আপনি কান পাতলেন বৃষ্টির শব্দে। গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছে সে শব্দ। চারপাশের ভিজে গাছপালার সবুজ বয়ে আনছে রোম্যান্টিসিজম। আসলে বর্ষার সঙ্গে প্রেম যেন ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে। আর বাঙালির কাছে বর্ষাকাল মানেই ইলিশ, খিচুড়ি এবং তেলেভাজা। আজ রইল আপনার বর্ষার এই তিন সঙ্গীর কিছু মনমাতানো রেসিপি।
বর্ষাকাল মানে প্রথমেই যা মনে আসে তা হল ইলিশ। আর ইলিশ মানেই গরম গরম ভাত, ইলিশ মাছের তেল আর ভাপা কিংবা পাতুরি। কিন্তু মন এবং পেট দুইই চাইছে নতুন কিছু। তাই চটজলদি বানিয়ে ফেলুন ইলিশ খিচুড়ি।
উপকরণঃ- ইলিশ মাছের পিস, বাসমতী চাল ২ কাপ, মুসুর ডাল ২ কাপ, পেঁয়াজ ৪টে, আদাবাটা, রসুন ২-৩ কোয়া, টক দই ১/২ কাপ, হলুদ গুঁড়ো, লঙ্কা গুঁড়ো, শাহ জিরে গুঁড়ো, তেজপাতা, দারচিনি, চিনি, নুন এবং সর্ষের তেল।
প্রণালীঃ- প্রথমে কড়াইতে সর্ষের তেল গরম করে পেঁয়াজ ভেজে বেরেস্তা বানিয়ে নিন। একটা বাটিতে দই, হলুদ, কিছুটা বেরেস্তা, নুন, লঙ্কা, গোলমরিচ, আদা বাটা মিশিয়ে নিন। এবার ইলিশ মাছের টুকরোগুলো ওই মশলায় মাখিয়ে রাখুন। এবার চাল-ডাল ধুয়ে জল ঝড়িয়ে নিন তারপর একটা বড় বাটিতে চাল, ডাল, বেরেস্তা, আদা-রসুন বাটা, লঙ্কা গুঁড়ো, হলুদ গুঁড়ো, নুন, চিনি, জিরে গুঁড়ো মিশিয়ে নিন। হাঁড়িতে তেল গরম করে তেজপাতা এবং দারচিনি ফোড়ন দিয়ে তাতে মশলা মাখানো চাল-ডাল দিয়ে নাড়ুন। অল্প ভাজা হলে চেরা কাচালঙ্কা এবং পরিমাণ মত গরম জল দিয়ে নেড়ে চাপা দিন। খিচুড়ি আধসেদ্ধ হলে ঢাকনা খুলুন। এবার হাতা দিয়ে অর্ধেক খিচুড়ি তুলে নিন। বাকিটার ওপর ইলিশ মাছ সাজিয়ে দিন। বাকি খিচুড়িটা ঢেলে দিন ওপরে। আধঘন্টা দমে রাখুন। আপনার ইলিশ খিচুড়ি তৈরি।
ইলিশ খিচুড়ি তো হল। এবার তাহলে হোক মশলা খিচুড়ি। বর্ষার দুপুর, প্রিয় গান আর পাতে এই নতুন খিচুড়ি।
উপকরণঃ- ঘি, চাল, ডাল, তেজপাতা, দারচিনি, ছোট এলাচ, লবঙ্গ, জিরে, হিং, পেঁয়াজ, কাচালঙ্কা, কড়াইশুঁটি, আদা-রসুন বাটা, টমেটো, কুচানো গাজর, ক্যাপসিকাম, হলুদ গুঁড়ো, লঙ্কা গুঁড়ো, ধনে পাতা, নুন, গরম মশলা।
প্রণালীঃ- প্রেশার কুকার আঁচে বসিয়ে ঘি গরম করুন। এবার একে এক তেজপাতা, দারচিনি, এলাচ, লবঙ্গ, জিরে এবং হিং দিয়ে নাড়তে থাকুন। এবার পেঁয়াজ, লঙ্কা, আদা-রসুন বাটা, টমেটো দিয়ে কষুন। তেল ছাড়লে বাকি সব্জী গুলো দিন। আবার নাড়ুন। এবার চাল আর ডাল দিন। ভালো করে কষুন। ৫ মিনিট পর ধনেপাতা কুচি এবং জল দিয়ে কুকার বন্ধ বন্ধ করে ৫টা সিটি দিন। ব্যস আপনার মশালা খিচুড়ি তৈরি।
দুপুরের পেটপুজো তো হল। এবার বর্ষার বিকেল। আর বৃষ্টির বিকেল মানেই তেলেভাজা। ঝমঝম বৃষ্টির দিনে প্রিয় বই, গরমাগরম চা আর মুখরোচক তেলেভাজা। রোজকার একঘেয়ে দৈনন্দিন জীবনের মধ্যে অনেকটা ফুরফুরে বাতাস বয়ে নিয়ে আসে এমন কিছু প্রিয় খাবার আর একটা গোটা বৃষ্টির দিন।