কথায় বলে, বছর দিয়ে বন্ধুত্বের বিচার হয় না। অনেক বছর কেটে গেলেও ছেদ পরে না বন্ধুত্বে। বলিউডি সিনেমায় এর উদাহরণ প্রচুর। কিন্তু বাস্তবে! খোঁজ নিয়ে দেখা যাবে, বাস্তবেও এমন ঘটনা ঘটে। কারণ সিনেমা তো বাস্তব থেকেই ধার করা হয়। এবার সেই কথাই আরও একবার প্রমাণ করে দিলেন কেনিয়ার সাংসদ রিচার্ড টোংগি।
বছর ৩০ আগে তিনি স্বদেশ ছেড়ে ঔরঙ্গাবাদের একটি ম্যানেজমেন্ট স্কুলে আসেন পড়াশুনা করতে। চরম আর্থিক দুর্গতির মুখে ৮০-র দশকে তিনি ২০০ টাকা ধার হিসেবে নেন স্থানীয় এক মুদি ব্যবসায়ীর থেকে। এরপরই সেই দোকানী কাশীনাথ গাউলির সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে তাঁর। তারপর গল্পটা মোড় নেয় অন্যদিকে। পড়া শেষ করে ম্যানেজমেন্ট স্কুল ছেড়ে কেনিয়া ফিরে যান রিচার্ড। ভবিষ্যৎ সুনিশ্চত করতে প্রথমে সাধারণ এক চাকুরীজীবী হিসেবে কাজ শুরু করলেও পরে তিনি দেশের সাংসদ হিসাবে নির্বাচিত হন।
এর মাঝে কেটে গিয়েছে অনেকগুলো বছর। কিন্তু বিপদের দিনে পাশে থাকা বন্ধুকে ভুলে যাননি কেনিয়ার সেই যুবক। এবার তাঁরই টানে আরও একবার ভারতের মাটিতে পা রাখলেন রিচার্ড। দেখা করলেন ৩০ বছরের পুরনো মিত্রের সঙ্গে। রিচার্ডের ফোন পেয়ে প্রথমে কেঁদে ফেলেন কাশীনাথ। পরে নিজেকে সামলে নিয়ে কেনিয়ার সাংসদের অপেক্ষায় প্রহর গুনতে থাকেন দোকানী।
ঔরঙ্গাবাদে এসে প্রথমে কাশীনাথের দোকানে গিয়ে ধার নেওয়া ২০০ টাকা ফেরত দেন কাশীনাথের তাঁর এই বিদেশী বন্ধু। বহুদিন বাদে পুরনো বন্ধুকে ফিরে পেয়ে তাঁকে নিয়ে বিলাসবহুল রেস্তোরাঁয় গিয়ে মধ্যাহ্নভোজনের প্রস্তাব দেন কাশীনাথ। কিন্তু অমত করে রিচার্ড বলেন, তিনি কোনও বিলাসবহুল হোটেলে যাবেন না। বরং দোকানীর ঘরের মেঝেতে বসে পাত পেড়ে খেলেন কেনিয়ার সাংসদ।
নিজের নিজের কেরিয়ারে বন্ধুর থেকে অনেক দূর এগিয়ে গেলেও, মাটি থেকে পা সরে যায়নি রিচার্ডের। তাই তো সুদূর কেনিয়া থেকে ভারতে পাড়ি দিয়েছিলেন ছেড়ে আসা বন্ধুর ঋণ মেটাতে আর তাঁর খোঁজ নিতে।