আলটপকা মন্তব্য নয়, ভুল করে থাকলে এড়িয়ে না গিয়ে মানুষের মুখোমুখি হওয়া, সমস্ত ভুল সংশোধন করে একুশের আগে ঘুরে দাঁড়ানো – এমনই কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর জোর দিয়ে বৃহ্স্পতিবার দলীয় বিধায়কদের সঙ্গে তৃণমূল ভবনে বৈঠক সারলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷
লোকসভা ভোটে রাজ্যে তৃণমূলের ফল প্রত্যাশিত হয়নি। তারপর থেকেই সমস্ত স্তরের জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রী৷ বৃহ্স্পতিবার তারই অংশ হিসেবে সমস্ত বিধায়কদের নিয়ে তিনি বসেছিলেন বৈঠকে৷ নির্ধারিত সময় দুপুর ৩টে হলেও, মুখ্যমন্ত্রী সেখানে পৌঁছে যান দুপুর ২টো নাগাদ৷ পৌঁছান এই মুহূর্তে শাসকদলের নির্বাচনী রণকৌশল স্থির করে দেওয়ার মাস্টারমাইন্ড প্রশান্ত কিশোরও৷ সেখানে প্রথম দফায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রশান্ত কিশোর–৩ জনের একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়৷ তারপর বিধায়কদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন দলনেত্রী৷
গোড়া থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জনসংযোগে জোর দিতে বদ্ধপরিকর৷ এদিন বারবার সেকথাই দলের জনপ্রতিনিধিদের বোঝান মমতা। প্রত্যেক বিধায়কের উদ্দেশেই তাঁর সাফ বার্তা, জনসংযোগে জোর দিতে হবে৷ মানুষের কাজে কোনও ভুল করে থাকলে, তা এড়িয়ে যাওয়া যাবে না৷ বরং মানুষের মুখোমুখি হয়ে সেই ভুল স্বীকার এবং সংশোধন করে নিতে হবে৷ এতে জনগণের ক্ষোভ কমবে৷ তাঁদের সঙ্গে মেলামেশার ধরনও পালটাতে হবে৷ চায়ের দোকানে বসেই সাধারণভাবে গল্প করতে হবে আমজনতার সঙ্গে৷ বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে না গিয়ে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে হবে৷ তাঁর আরও নির্দেশ, সোশ্যাল মিডিয়ায় বাড়তি সক্রিয়তা প্রয়োজন৷ তথ্য দিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলকে চাপে ফেলতে হবে৷ সংবাদমাধ্যম এড়িয়ে চলতে হবে এবং কোথাও কোনও আলটপকা মন্তব্য করা যাবে না৷
পাশাপাশি এদিনের বৈঠকে সংগঠনের ওপরেও জোর দেন তৃণমূল সুপ্রিমো। বুথস্তরে দু’ভাগে কাজ করার নির্দেশ দেন তিনি। একদল সোশ্যাল মিডিয়ায় নজর রাখবে, আরেকদলের দায়িত্ব শুধুই সংগঠনের দেখভাল করা৷ দুটি কাজেই ২ জন করে ৪ জনের একটি তালিকা তৈরি করতে হবে এবং এই চারজনের প্রত্যেকেই বিধায়ক হবেন৷ এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধায়কদের আরও বলেন, ‘৭দিনই নিজের নিজের কেন্দ্রে ঘুরতে হবে। পরিস্থিতি বুঝতে হবে। আরও বেশি সময় দিতে হবে’৷