দেশবাসীর নয়। ‘আচ্ছে দিন’ এসেছে গেরুয়া শিবিরে। সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে, ২০১৬ সালে নোটবন্দীর পর বিজেপির সম্পত্তি বেড়েছে ৮১ শতাংশ। ৫৭০ কোটি থেকে একলাফে তাদের সম্পত্তির পরিমাণ হয়েছে ১০৪০ কোটি। শুধু তাই নয়। লোকসভা ভোটের আগের দু’বছরে রাজনৈতিক দলগুলি কর্পোরেট, ব্যবসায়িক সংস্থার থেকে ৯৮৫ কোটি ১৮ লক্ষ টাকা চাঁদা পেয়েছে। তার মধ্যে ৯১৫ কোটি ৫৯ লক্ষ টাকা অর্থাৎ প্রায় ৯৩ শতাংশই পেয়েছে বিজেপি! তবে এই বিপুল চাঁদার কতটা বিদেশের, তার কোনও হিসেব নেই। মোদী জমানায় আইন বদলের ফলে সেই তথ্য এখন ধরাছোঁয়ার বাইরে।
প্রসঙ্গত, ২০১৮-র বাজেটের অর্থ বিলের মাধ্যমে বিদেশি অনুদান নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করা হয়েছে। এতে ১৯৭৬-এর পর থেকে বিদেশি অনুদান এসেছে কি না, তার পরীক্ষা থেকে রাজনৈতিক দলগুলি ছাড় পেয়েছে। জনপ্রতিনিধিত্ব আইনে রাজনৈতিক দলগুলির বিদেশ থেকে চাঁদা নেওয়ায় বাধা রয়েছে। ২০১৬-র বাজেটের অর্থ বিলে ঘুরপথে সেই রাস্তাও তৈরি করে দেওয়া হয়। বিদেশি মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করে বলা হয়, সংস্থার বিদেশি মালিকানা ৫০ শতাংশের কম হলে, তাদের চাঁদা বিদেশি সংস্থার বলে ধরা হবে না। এ প্রসঙ্গে আইআইএম-আমদাবাদের প্রাক্তন অধ্যাপক, এডিআরের শীর্ষকর্তা জগদীপ চোখার বলছেন, ‘বিদেশি সংস্থাগুলি তাদের ভারতীয় শাখার মাধ্যমে দলগুলিকে চাঁদা দিচ্ছে। ফলে এর কতখানি বিদেশ থেকে আসছে, তা খতিয়ে দেখা খুবই কঠিন কাজ।’
এর বিপদের দিকটিও মনে করিয়ে দিয়েছেন জগদীপ। তাঁর কথায়, ‘এই চাঁদার কারণে রাজনৈতিক দল বিদেশি সংস্থার ওপরে নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। সেই দল পরে সরকারে এলে বা জোট সরকারের শরিক হলে প্রতিরক্ষা, শিক্ষার মতো ক্ষেত্রে তা ঝুঁকির বিষয় হয়ে দাঁড়াবে। কারণ, সরকারি সিদ্ধান্ত দিনের শেষে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত।’ উল্লেখ্য, ৯৮৫ কোটি ১৮ লক্ষ টাকার মধ্যে কংগ্রেসের সিন্দুকে জুটেছে মাত্র ৫৫.৩৬ কোটি টাকা অর্থাৎ ৫.৬ শতাংশ। আর অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস (এডিআর)-এর হিসেব বলছে, ২০১৬-১৭ ও ২০১৭-১৮-তে জাতীয় দলগুলির মধ্যে কর্পোরেট সংস্থার চাঁদা তৃণমূল পেয়েছে মাত্র ২.০৩ কোটি টাকা।