মাত্র ১ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরে গিয়েছেন রোহিত শর্মা। বিরাট কোহলি, লোকেশ রাহুলও ১ রান করেই আউট হলেন। ২৫ বলে মাত্র ৬ রান করে ডাগ আউটে ফিরলেন দীনেশ কার্তিকও। স্কোরবোর্ডে দেখাচ্ছে তখন ১০ ওভারে ২৪ রানে ৪ উইকেট। সেটা দেখেই বড় রানে হারের শঙ্কা চেপে বসেছিল ভারতীয় সমর্থকদের মনে। কিন্তু তারপরেই এক অদম্য লড়াই দেখলেন ম্যাঞ্চেস্টারে উপস্থিত ২৫ হাজার দর্শক। প্রথমে ঋষভ পন্থ ও হার্দিক পান্ড্য এবং তারপর মহেন্দ্র সিং ধোনি ও রবীন্দ্র জাদেজার হার না মানা পার্টনারশিপ। হারের মুখ থেকে প্রায় জয় ছিনিয়েই নিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু শেষদিকে আউট হয়ে গেলেন জাদেজা ও ধোনি। যার ফলে ভারতকে হারিয়ে বিশ্বকাপের ফাইনালে গেল কিউয়িরা।
নিউজিল্যান্ডের করা ২৩৯ রান তাড়া করতে গিয়ে শুরুতেই মুখ থুবড়ে পড়ে ভারতীয় টপ অর্ডার। টিমের স্কোরবোর্ডে ৫ রান ওঠার মধ্যেই প্যাভিলিয়নে ফিরে যান ভারতের সবথেকে সফল তিন ব্যাটসম্যান রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি ও লোকেশ রাহুল। দীনেশ কার্তিক ও ঋষভ পন্থ কিছুটা ধরার চেষ্টা করলেও দুরন্ত ক্যাচে কার্তিককে আউট করেন নিশাম। ২৪ রানে ৪ উইকেট পড়ে যায় ভারতের।
তারপর চাপের মধ্যে পার্টনারশিপ গড়ার চেষ্টা করেন ঋষভ ও হার্দিক। কিউয়ি পেসারদের সামলে ভালোই খেলছিলেন তাঁরা। কিন্তু ধৈর্য্য ধরে রাখতে পারলেন না। দু’জনেই ৩২ রানের মাথায় নিউজিল্যান্ডের স্পিনার স্যান্টনারের বিরুদ্ধে বড় শট খেলতে গিয়ে আউট হন। ৯২ রানে ৬ উইকেট পড়ে যায় ভারতের।
দেখে মনে হচ্ছিল ১৫০’র মধ্যে শেষ হয়ে যাবে ভারতের ব্যাটিং। কিন্তু সেখানেই লড়াই করলেন ধোনি এবং জাদেজা। প্রথম থেকেই মারকুটে মেজাজে ছিলেন জাড্ডু। অন্যদিকে ধোনি তাঁর স্বভাবসিদ্ধ খেলা খেলছিলেন। জাদেজাকে বেশি বল খেলার সুযোগ করে দিচ্ছিলেন। আস্কিং রেট বাড়তে থাকলেও ধীরে ধীরে লক্ষ্যের দিকে যাচ্ছিল ভারত।
বিশ্বকাপে প্রথম ব্যাট করতে নেমে হাফসেঞ্চুরি করেন জাদেজা। দেখে মনে হচ্ছিলো, যতক্ষণ শ্বাস, ততক্ষণ আশ! একের পর এক বাউন্ডারি আর ওভারবাউন্ডারি হওয়ায় মনে হলো, ২ জন মিলেই হয়তো অসাধ্য সাধন করবেন। আর ঠিক তখনই ছন্দপতন। ট্রেন্ট বোল্টকে বড় শট খেলতে গিয়ে ৫৯ বলে ৭৭ করে আউট হন জাদেজা। পরের ওভারে ২ রান নিতে গিয়ে গাপটিলের ডাইরেক্ট থ্রো তে ৫০ রানের মাথায় আউট হন ধোনিও। দুজনে আউট হয়ে যেতে ওখানেই শেষ হয় ভারতের জয়ের আশা।
শেষ পর্যন্ত ৪৯.৩ ওভারে ২২১ রানে অলআউট হয়ে যায় ভারত। ১৮ রানে ম্যাচ জিতে ফাইনালে চলে যায় নিউজিল্যান্ড। অন্যদিকে ফের একবার বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল হেরে শূন্য হাতেই ফিরতে হলো ভারতকে।