শুধু বাংলাতেই নয়, আসামেও সম্প্রতি ব্যাপক গোষ্ঠীকোন্দল দেখা দিচ্ছে পদ্মশিবিরের মধ্যে। সে রাজ্যেও বিজেপির ভিতর ও বাহিরে অন্দরে-অন্দরে এখন লড়াই চলছে ‘আদি’ বিজেপি বনাম ‘নব্য’ বিজেপির। প্রকাশ্যেই চলছে একে অন্যের বিরুদ্ধে দোষারোপ। আদিদের বক্তব্য, নতুনরা বিভিন্ন দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থেকে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে। এ কথা আবার মানতে নারাজ নতুনরা। আদিরা হালে তেমন পানি পাচ্ছে না বলেই এখন সমালোচনায় মুখে বলে পাল্টা অভিযোগ।
অন্যদিকে, শাসক দলের এই ঘরোয়া কোন্দল নিয়ে কংগ্রেস বলছে, বিজেপির নিজেদের গােলমালেই বেরিয়ে আসছে ঝােলার বিড়াল। আসলে বিজেপি নেতারাই এখন একে অন্যের বিরুদ্ধে সিন্ডিকেট রাজ বা দুর্নীতির অভিযোগ আনছেন। আর নিয়েই তাদের কটাক্ষ করছে হাত শিবির। প্রসঙ্গত, প্রাক্তন রেল রাষ্ট্রমন্ত্রী রাজেন গোঁহাই থেকে শুরু করে বিজেপি বিধায়ক শিলাদিত্য দেব, দিলীপ পাল, অতুল বোরা-সহ একের পর এক বিজেপির আদি নেতা দলে নবাগতদের বিরুদ্ধে মুখ খুলে চলেছেন।
শিলচরের বিধায়ক দিলীপ পাল আগেই দলের একাংশের বিরুদ্ধে সিন্ডিকেট রাজের অভিযোগ তুলেছিলেন। আর শুক্রবার বেআইনি কয়লা খাদান চালান নিয়ে নবাগতদের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন শিলাদিত্য দেব। এবং শনিবার মুখ খুললেন রাজেন গোহাই। তাঁর অভিযোগ, অন্য দল থেকে আসা নেতারা বিজেপির ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। দলকে সতর্ক করে দিয়ে রাজেনের সাফ কথা, এ ধরনের আচরণ বিজেপির আদর্শের পরিপন্থী। এটা বরদাস্ত করা হবে না। রাজনের এই মন্তব্যের কারণ, সম্প্রতি কংগ্রেস বিধায়ক রূপজ্যোতি কুর্মির বিজেপিতে যোগদানের ঘোষণা।
আসামে অবশ্য বিজেপির প্রায় পুরোটাই অন্য দল থেকে ভাঙিয়ে আনা। মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল, পরিবহণ মন্ত্রী চন্দ্রমােহন পাটোয়ারিরা এসেছেন অসম গণ পরিষদ থেকে। আবার হীমন্ত বিশ্বশর্মা, পীযূষ হাজারিকারা এসেছেন কংগ্রেস থেকে। এঁদের সকলের বিরুদ্ধেই রয়েছে একাধিক আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ। আবার দলের আদি নেতা তথা বর্তমান রাজ্য সভাপতি রঞ্জিত দাসের নামে রয়েছে সুপারি সিন্ডিকেট চালানর অভিযোগ। নব্য বিজেপি নেতারা সে কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। এই সব মিলিয়েই প্রকাশ্যে চলে এসেছে আসাম বিজেপির অন্তর্কলহ। যা নিয়ে বেজায় অস্বস্তিতে গেরুয়া শিবির।