সংসদে দাঁড়িয়ে সরকারের তুলোধনা করছেন দুই সাংসদ। তর্কাতর্কি করছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে। মনে হচ্ছিল উভয়েই বিরোধী দলের সাংসদ। তবে ভুল ভাঙল ক্ষণিকেই। নাহ, কংগ্রেস বা তৃণমূল নয়, ওঁরা শাসক দল বিজেপির দুই প্রভাবশালী সাংসদ। প্রথমজন বিহারের রাজীবপ্রতাপ রুডি। আর দ্বিতীয়জন ‘ড্রিম গার্ল’, উত্তরপ্রদেশের মথুরার সাংসদ হেমা মালিনী। গতকাল দুজনেই সরব হলেন সরকারের সমালোচনায়।
প্রসঙ্গত, সোমবার ভরা লোকসভায় বিহারের ইকো ট্যুরিজম সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তর নিয়ে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রী প্রহ্লাদ সিং প্যাটেলকে তুলোধনা করেন রুডি। যা নিয়ে বেজায় অস্বস্তিতে পড়েছে গেরুয়া শিবির। গতকাল লোকসভার প্রশ্নোত্তর পর্বে রুডি অভিযোগ করেন, বিহারের ইকো ট্যুরিজম নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার তাঁর কোনও কথাই শোনেনি। বরং বছরের পর বছর ধরে কেন্দ্রীয় পর্যটনমন্ত্রকের আধিকারিকেরা তাঁকে এই সংক্রান্ত নতুন নতুন নিয়মের কথা শুনিয়েছেন।
বিজেপি সাংসদ বলেছেন, ‘এই বিষয় নিয়ে গত তিন বছর ধরে আমি ঘুরে বেরাচ্ছি। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও দফতরে গিয়ে এইসব প্রস্তাব নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে, তা আমার বোধগম্য হচ্ছে না। ২০১৮ সালের ৯ মার্চ এই প্রস্তাবই আমি কেন্দ্রীয় সরকারকে দিয়েছিলাম। যখনই আমি প্রস্তাব নিয়ে মন্ত্রীর কোনও আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করি, আমাকে নতুন নতুন নিয়মের কথা বলা হয়। শুনতে পাই সংশ্লিষ্ট প্রস্তাব নাকি কেন্দ্রের বিবেচনাধীন।’
তাঁর সাফ কথা, ‘একে সরকার যে নাম দিতে চায় দিয়ে দিক। ইকো ট্যুরিজম করতে পারে, রিলিজিয়াস ট্যুরিজম করতে পারে, অথবা অন্য কিছুও করা যেতে পারে। কিন্তু পর্যটনের খাতে বিহারের যা পাওনা হয়, তার পুরোটাই বিহারের মানুষের পাওয়া উচিত।’ চাপে পড়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, ‘পর্যটন বিষয়ক উন্নয়নের প্রস্তাব আসা উচিত রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে। রাজ্য কোনও ডিপিআর পাঠায়নি।’
মন্ত্রীর মুখে এই কথা শুনে তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠেন রুডি। তিনি বলেন, ‘তাহলে আপনার মন্ত্রকের আধিকারিকদের বিরুদ্ধে তো আমাকে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস দিতে হবে। কারণ ওঁরা আপনাকে বিপথে চালিত করছে। আমি নিজে ডিপিআর দিয়েছি৷ সংসদে ডিপিআর পেশ করছি।’ এরপরই ডিপিআর পেশ করেন তিনি। যা দেখে রুডিকে শান্ত করার চেষ্টায় প্রহ্লাদ বলেন, ‘যে ভাবেই হোক ডিপিআর দিন। বিবেচনা করা হবে।’
এরপর কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং বিজেপি সাংসদের মধ্যে এই তর্ক আর বাড়তে দিতে চাননি লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। তবে রুডির এহেন প্রশ্নকে বিরোধী বেঞ্চের একাংশ টেবিল চাপড়ে স্বাগত জানান। প্রহ্লাদ-রুডির এই পর্ব মিটতে না মিটতেই পরবর্তী প্রশ্ন তোলেন হেমা। তাঁরও একইরকমের অভিযোগ। তিনি বলেন, ‘বহুবার আবেদন করার পরেও কৃষ্ণ সার্কিটের অন্তর্গত মথুরা, বৃন্দাবন সংলগ্ন এলাকার উন্নয়নের কোনও উদ্যোগই নেয়নি কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রক।’