২০০৪ সালে ভারতীয় দলে অভিষেক হলেও, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে গত ম্যাচেই কেদার যাদবের পরিবর্তে বিশ্বকাপ অভিষেক হয়েছে দীনেশ কার্তিকের। তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, টিম ম্যানেজমেন্ট তাঁকে ঠিক কী নির্দেশ দিয়েছিল? উত্তরে কার্তিক বলছেন, ‘‘আমাকে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, পরে ব্যাট করলে পরিস্থিতি বুঝে দ্রুত রান বাড়াতে হবে। আর সেটা সাত নম্বরে ব্যাট করতে নেমে।’’ তিনি আরও বলছেন, ‘‘আর যদি প্রথমে ব্যাট করি, তা হলে যে রানসংখ্যা নিশানা বানিয়ে দল এগোচ্ছে সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য সব রকমের চেষ্টা করতে হবে। আরও বলা হয়েছিল, যেখানেই ব্যাট করি না কেন, দ্রুত পরিস্থিতি বুঝে নিজের সেরাটা দিতে হবে।’’ আজ যদি সাত নম্বরে নামেন তিনি তাহলে সেখানেই নিজের সবটুকু দিতে তৈরি দীনেশ৷
দিনের পর দিন রিজার্ভ বেঞ্চে বসে থাকা। শেষে বাংলাদেশ ম্যাচে হঠাৎ একটা সুযোগ এবং ডেথ-এ সাত নম্বরে নেমে ব্যর্থতা। কিন্তু তাতে দমছেন না কেকেআর অধিনায়ক এবং ২০০৭ বিশ্বকাপে টিমে থাকা দীনেশ কার্তিক। স্বীকার করে নিচ্ছেন, সাত নম্বরেই বাংলাদেশ ম্যাচে তাঁকে চেয়েছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। হেডিংলেতে বসে কার্তিক বলছিলেন, ‘আমি তৈরি থাকতাম। যে কোনও ম্যাচে সুযোগ আসতে পারে ভেবেই প্রস্তুতি নিতে হয় সবাইকে। সাত নম্বরে আমার রোল পরিষ্কার করে দিয়েছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। যেখানে দায়িত্ব বলতে টিমকে পার স্কোরে পৌঁছে দেওয়া।’
কিন্তু ডেথ-এ নেমে প্রথম বল থেকে মারাটা কার্তিক কেন, বিশ্বের সবার পক্ষেই কঠিন। বিশেষত, পরে ব্যাট করার সময় যখন উইকেট স্লো এবং বল পুরোনো হয়ে যায়, তখন ব্যাপারটা একেবারেই সহজ নয়। কার্তিক ব্যাখ্যা দিচ্ছেন, ‘এই বিশ্বকাপে অধিকাংশ ক্ষেত্রে বোলাররা ইয়র্কারের পাশাপাশি ডেথ-এ স্লো বাউন্সার দিচ্ছে। তাতে উইকেটও আসছে। আবার ক্রস সিমেও বল করা হচ্ছে প্রচুর। এখানে ব্যাটসম্যানকে অনেক বেশি স্কিলফুল হতে হয়। টাইমিংয়ে চার-ছয় পাওয়া কঠিন হয়, ফলে পাওয়ার হিটিংয়ের উপর নির্ভর করতে হয়।’ সঙ্গে সংযোজন, ‘ডেথ-এ নেমে আপনি কী ভাবে খেলবেন, সেটা নির্ভর করে পরিস্থিতির উপরও। দেখতে হয়, ঝুঁকির শট খেলার মতো ব্যাক আপ আপনার টিমের আছে কি না। সেটা যদি থাকে, তা হলে খেলা যেতে পারে। না হলে টিমের পজিশন বুঝে খেলতে হয়।’
এর আগে ২০০৭ বিশ্বকাপে টিমে থাকলেও সেই বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্যায়েই ছিটকে গিয়েছিল ভারত। তিনটে ম্যাচের একটাতেও প্রথম একাদশে ছিলেন না কার্তিক। সেটা মাথায় রাখলে ১২ বছর পরে আবার বিশ্বকাপের স্কোয়াডে ঢোকা আর বাংলাদেশ ম্যাচে অভিষেক। মেনে নিচ্ছেন, এই বিশ্বকাপে পরে ব্যাট করে রান তাড়া করাটা অনেক সময়ই কঠিন হচ্ছে। বলছেন, ‘টিমগুলো যখন পরে ব্যাট করছে, বেশির ভাগ সময় উইকেট স্লো হয়ে যাচ্ছে, স্পিনাররা সাহায্য পাচ্ছে। স্কোরবোর্ডে আস্কিং রেটের চাপও এত বড় টুনার্মেন্টে বড় হয়ে যাচ্ছে।’
সে জন্যই কি ইংল্যান্ড ম্যাচে রান তাড়া করে জেতা যায়নি? মানছেন না কার্তিক, ‘না না, আমি মনে করি আমাদের টিম যথেষ্ট ভালো রান তাড়া করতে পারে। অতীতে বারবার সেটা করেওছে। পরে ব্যাট করলে আমরা চাপে থাকি, এটা মানতে পারছি না।’