দ্বিতীয় ইনিংস শুরুর পর প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেট মোদী সরকারের। ফলে অনেক প্রত্যাশা ছিল দেশবাসীর। তবে দেশের প্রথম পূর্ণ সময়ের মহিলা অর্থমন্ত্রী হিসেবে সংসদে যে বাজেট পেশ করলেন নির্মলা সীতারামন, তাতে ছিটেফোঁটাও প্রত্যাশা তো পূরণ হলই না, উল্টে এতদিন যে জল্পনা ছিল, সেই জল্পনাকেই বাস্তবায়নের পথে কেন্দ্র। রেল এবং বিভিন্ন সরকারি সংস্থার বেসরকারিকরণের পথেই হাঁটতে চলেছে মোদী সরকার। নির্মলা সীতারামনের বাজেট বক্তৃতায় সেই ইঙ্গিতই মিলল।
রেলের ক্ষেত্রে ‘পিপিপি’ মডেল বা ‘পাবলিক–প্রাইভেট পার্টনারশিপ’–এর প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। ভারতীয় রেলের খোলনলচে বদলাতে বেসরকারি বিনিয়োগ অত্যন্ত জরুরি, তা গতকাল সাফ বলে দিলেন অর্থমন্ত্রী। আগেই ইঙ্গিত মিলেছিল বিপুল জনমত নিয়ে ক্ষমতায় ফেরার ফলে রেলের বেসরকারিকরণের মতো বড় সিদ্ধান্ত নিতে পিছপা হবে না সরকার। সেই মতো বাজেটের শুরুতেই রেলের মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং স্পর্শকাতর বিষয়ে বেসরকারি বিনিয়োগ টানার প্রস্তাব পেশ করল তারা।
বিরোধীদের প্রতিবাদের মুখে পড়তে হবে জেনেও গতকাল অর্থমন্ত্রী পরিষ্কার জানিয়ে দেন, বয়সের ভারে ন্যুব্জ ভারতীয় রেলের আধুনিকীকরণ এবং নয়া পরিকাঠামো নির্মাণে আনুমানিক ব্যয় ১৫ লক্ষ কোটি টাকা। কিন্তু রেল আয় করছে মাত্র ১ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা। ফলে বিপুল অর্থ জোগান দিতে প্রয়োজন বেসরকারি বিনিয়োগের। তাই এই মুহূর্তে পরিস্থিতির দাবি মেনে ‘পাবলিক–প্রাইভেট পার্টনারশিপ’ অত্যন্ত প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, যাত্রী পরিষেবা এবং দেশজুড়ে পণ্য পরিষেবার কথা মাথায় রেখে ২০৩০ সাল পর্যন্ত রেলের পরিকাঠামো নির্মাণ তথা রক্ষণাবেক্ষণে আনুমানিক খরচ প্রায় ৫০ লক্ষ কোটি টাকা। এখানেই শেষ নয়, এর পাশাপাশি সরকারি সংস্থাগুলিতেও বিলগ্নীকরণের পথে কেন্দ্র। বিলগ্নীকরণের মাধ্যমে ১ লক্ষ ৫ হাজার কোটি টাকা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে মোদী সরকার। আর তাই সরকারি সংস্থা বিক্রি করেই আয়ের পরিকল্পনা করা হয়েছে। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই বইতে শুরু করেছে সমালোচনার ঝড়।