নির্মলা সীতারামণের বাজেট শেষ হতেই এগিয়ে এলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অর্থমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বললেন, ‘এই বাজেটে আশা আছে, দিশা আছে’।
কিন্তু খোদ বিজেপি কর্মীরাই বাজেটে আশা দেখছেন না কোনও। দিশা তো নয়ই। আর সাধারণ মানুষ? তাঁদের অবস্থা আরও খারাপ। জনৈক ব্যক্তি টুইটে লিখেছেন, ‘তা হলে আপনি বলতে চাইছেন প্যান আর আধার বদলাবদলি করলেই তা বিত্তমধ্য ভারতীয়দের করছাড়ের সুবিধা দেবে? তাহলে আপনি প্রথমে একটা সমস্যা সৃষ্টি করলেন। তার পর সমস্যাটাকে বাড়ালেন, আরও জটিল করলেন এবং তার পর সমস্যাটাকে কমাতে চাইছেন (যদিও গোটা ব্যাপারটাই বিভ্রান্তিকর) আর বলতে চাইছেন এতে আমাদের লাভ হবে? প্যান আর আধার বদলাবদলি করে মধ্যবিত্তের কোনও লাভ হবে না।
বিজেপি সাংসদরা প্রকাশ্যে কিছু বলছেন না ঠিকই, কিন্তু এই বাজেট দেখে তাঁরা একেবারে চুপ৷ কৃষক, মধ্যবিত্ত ও চাকরিজীবীদের জন্য কোনও সুখবর নেই, গ্রামও যে খুব কিছু পেয়েছে এমন নয়, পেট্রল-ডিজেলের দাম এক টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত লোককে একেবারেই খুশি করবে না৷ অথচ, লোকের প্রত্যাশাটা লোকসভা নির্বাচনের আগে ভোট অন অ্যাকাউন্ট থেকে বেড়ে গিয়েছিল৷ কৃষকদের আশা ছিল, তাঁদের ছ-হাজার টাকা বেড়ে দশ হাজার হবে, গরিবদের আশা ছিল পেনশন বাড়বে, নতুন কোনও কল্যাণ পরিকল্পনা নিয়ে আসবেন নরেন্দ্র মোদী৷
প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা হল, কৃষকদের আয় ২০২২-এর মধ্যে দ্বিগুণ করে দেওয়া হবে৷ অর্থনৈতিক সমীক্ষা বলছে, কৃষিতে বৃদ্ধির হার ২.৯ শতাংশ৷ তিন বছরের মধ্যে কৃষকদের আয় বাড়াতে গেলে কৃষিতে বৃদ্ধির হার হতে হবে ১৪ শতাংশ৷ তার জন্য কৃষিতে বিপুল বিনিয়োগ দরকার ছিল৷ সেটা হয়নি৷ ফলে সেই আশায় জল পড়লে অবাক হওয়ার কিছু নেই৷
অবশ্য স্বান্তনা খুঁজতে একরকম যুক্তি খাড়া করছেন অধিকাংশ বিজেপি নেতা-কর্মীরা। তাঁদের কথায়, এমন বাজেট করাই মোদীর স্টাইল। ক্ষমতায় আসার পর প্রথম দু’বছরে তিনি কঠোর বাজেট করেন৷ পরের দু’বছরে তিনি লোককে কিছুটা ছাড় দেন৷ শেষ বছরে গিয়ে ঢালাও জনমোহিনী প্রকল্প নিয়ে আসেন৷ অবশ্য সেটা কতটা হবে তাতে সন্দিহান গেরুয়া শিবিরের অনেক নেতা-কর্মীই।