দেশের বিভিন্ন জায়গা, এমনকী এই বাংলাতেও ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান বলানো নিয়ে মারধর, এমনকী প্রাণ কেড়ে নেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। বিজেপি সমর্থকদের এহেন সন্ত্রাসে তটস্থ দেশবাসী। রীতিমতো বাধ্য করা হচ্ছে দলীয় স্লোগানে গলা মেলাতে। এই ঘটনারই তীব্র প্রতিবাদ করলেন নোবেলজয়ী অর্থবিদ অমর্ত্য সেন।
শুক্রবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে এসে একটি প্রশ্নের উত্তরে দিতে গিয়ে নোবেলজয়ী বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ তথা অধ্যাপক ড. অমর্ত্য সেন বলেন, ‘জয় শ্রীরাম এখন আর নিছক শ্লোগান নয়, তা এখন প্রহারের মন্ত্র। এই স্লোগান বা রামনবমী, কোন কিছুর সঙ্গেই বাঙালির কোনও যোগ নেই। নতুন এই সংস্কৃতি আমদানির পিছনে বিভেদের রাজনীতি কাজ করছে। এক সময় হিন্দু মহাসভা এই ধরনের সংস্কৃতির আমদানি ঘটানোর চেষ্টা করেছিল বাংলায়। বিভেদের রাজনীতির বাতাবরণ তৈরি করার চেষ্টা করেছিল। এখন বিজেপি ঠিক সেই উদ্দেশ্যেই বাংলায় জয় শ্রীরাম সংস্কৃতির আমদানি ঘটানোর চেষ্টা করছে।’ বিশিষ্ট এই বাঙালির এই বক্তব্য মেনে নিতে পারেনি গেরুয়া শিবিরের নেতারা। তার জেরেই শনিবার অমর্ত্যবাবুকে একযোগে আক্রমণ করা শুরু করেছেন দিলিপ ঘোষ থেকে সায়ন্তন বসুরা।
শনিবার পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের কল্যাণপুরে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিবস পালনের এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে অমর্ত্য সেনকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন সায়ন্তন। বিজেপির এই নেতা বলেন, ‘উনি নোবেল পেয়েছেন কিন্তু ইতিহাসের কিছু জানেন না। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বিজেপির বিরুদ্ধে বলে বিজেপিকে হারানো যাবে না। অনেক বড়ো বড়ো সুরমা এসেছে তারা করতে পারেনি অমর্ত্য সেন কি করে নেবে। ওনার কথায় পাশের বাড়ির লোক ভোট দেয় না, গাড়ির ড্রাইভার ভোট দেয় না। ওনার কোন গুরুত্ব নেই। কারন আমি জানি অমর্ত্য সেনের বিরুদ্ধে বললে একটা ভোটও কমবে না বরং পঞ্চাশটা ভোট বাড়বে।’
বিজেপি নেতৃত্বের এহেন কথায় বারবার হতবাক হয়েছে দেশবাসী। সবার মনেই এক প্রশ্ন ঘোরে কি করে দেশ তথা বাঙালির গর্বকে কি করে এমন ভাষায় আক্রমণ করতে পারেন গেরুয়া শিবির? শিক্ষার ক্ষেত্রে এমন উদাহরণ কি মানায় বিজেপি নেতা-নেত্রীর?