দ্বিতীয় মোদী সরকারের প্রথম বাজেট পেশ শেষ হতেই সোশ্যাল মিডিয়া ছেয়ে গেল তীক্ষ্ণ বিদ্রুপে। ক্ষোভ উগড়ে দিলেন সাধারণ মানুষ। সে নির্মলা সীতারামণের স্যুটকেসের বদলে ‘বহি-খাতা’ হোক কিংবা বেকার সমস্যা নিয়ে টুঁ শব্দ না করা – একের পর এক ব্যঙ্গে মোদী সরকারকে ধুয়ে দিলেন সাধারণ মধ্যবিত্ত মানুষ।
স্বাধীনতার পর প্রথম বার বাজেট পেশ করতে এসে স্যুটকেসের বদলে লাল শালুতে মুড়ে ফাইল নিয়ে এসেছিলেন অর্থমন্ত্রী সীতারামন। প্রাশ্চাত্য সংস্কৃতির দাসত্ব থেকে মুক্তির প্রতীক বলা হচ্ছিল নির্মলার এই আচরণকে। তা দেখে একজন লিখলেন, ‘আপনার ফোল্ডারটা সংস্কারি, পশ্চিমী ভাবনার দাসত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর প্রতীক। কিন্তু আপনার আকাঙ্খা হল ৩ ট্রিলিয়ান মার্কিন ডলার। হায় ভন্ড’। এরই সঙ্গে আরেকজনের প্রশ্ন, ‘মার্কিন ডলারকে বেঞ্চমার্ক মুদ্রা না করে, ভারতীয় টাকাকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করছেন না কেন’? পরের জন পুরনো গানের কলি তুলে দিয়ে লিখলেন, ‘অচ্ছা সিলা দিয়ে তুনে মেরে প্যার কা’।
বাজেট ঘোষণার পরেই পেট্রোলের দাম বেড়েছে লিটারে আড়াই টাকা, ডিজেলে ২ টাকা ৩০ পয়সা। এতেই রীতিমতো ক্ষুব্ধ আমজনতা থেকে মধ্যবিত্ত। সময় নষ্ট না করে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির টুইটারে একজন টুইট করলেন, ‘সাধারণ, সৎ করদাতা ও মধ্যবিত্তদের জন্য এটা সবচেয়ে খারাপ বাজেট’। এরপরেই তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘এবারে বহু সমর্থককে আপনারা হারাবেন’। টুইটে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে আরেকজন লিখেছেন, ‘পেট্রোল-ডিজেলের দাম বাড়ল। সৎ করদাতারা কোন সুবিধা পেলেন? কর ছাড়ের সুবিধা, পেনশনের সুবিধা কোথায় গেল? কোথায় গেল কর্পোরেট কোম্পানির কাছে গচ্ছিত গ্র্যাচুইটির টাকা? আপনারা সত্যিই কি সৎ লোকেদের কথা ভাবেন’?
বাজেটে বেকার সমস্যা নিয়ে কোনও কথা না-থাকায় রীতিমতো ক্রুদ্ধ একজনের টুইট, ‘বাজেট ২০১৯ একটা অপদার্থ ব্যাপার। বেকার সমস্যা সমাধানে কোনও কথা নেই’। তবে বাজেট নিয়ে রীতিমতো ছেলেখেলা করেছেন দেশের তরুণ সম্প্রদায়। একজন টুইটারে লিখেছেন, ‘তাহলে বাজেট ঘোষণা হল। কিন্তু নেটফ্লিক্স, প্রাইম বা হটস্টারের বার্ষিক চাঁদায় ভর্তুকি নিয়ে তো কোনও কথা নেই বাজেটে! এরকম ভারতেই থাকতে চাই নাকি আমরা?’
ক্ষোভের হাত থেকে রেহাই পাননি স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীও। যেমন একটা মিম দেখানো হয়েছে। ‘বাজেটের আগে’ মোদী বসে আছেন একটা পাথরের ওপর। আর ‘বাজেটের পরে’ মোদী একেবারে শুয়ে পড়েছেন একটা চ্যাপ্টা পাথরের ওপর। শেষে দেখানো হয়েছে, কংগ্রেসের রাহুল গান্ধী প্রথমে শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে। তার পর ধীরে ধীরে ঘুমে ঢলে পড়লেন তিনি। দুটোই রীতিমতো ভাইরাল।