রাজ্যের নাম বদলে ‘বাংলা’ করার প্রস্তাব নাকচ হওয়ার জন্য বেনজিরভাবে সরাসরি নিজের কৃতিত্ব দাবি করলেন তথাগত রায়। এর ফলে নতুন করে আগুনে ঘি পড়ল। সঙ্গে স্পষ্ট হয়ে গেল রাজ্যের নাম বদলে ‘বাংলা’ না করার পিছনে কাজ করছে একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক চক্রান্ত।
মোদী সরকার রাজ্যের নাম বদলে সায় না দেওয়ার পর ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন তথাগত রায়। সেখানে তিনি লেখেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের নাম বদলের অপচেষ্টা প্রতিহত করার কেন্দ্রীয় পদক্ষেপের পিছনে আমি কৃতিত্ব দাবি করতে পারি কি?’ তারপর লিখেছেন, বিধানসভায় এবিষয়ে প্রস্তাব পাস করার পর তিনি নিজে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে দেখা করেন। সেখানেই তিনি রাজনাথকে বুঝিয়েছিলেন রাজ্যের নাম বদলের প্রস্তাব মানা কেন উচিত নয়। এখানেই না থেমে বাংলা নামে সমর্থনকারী বিদ্বজ্জ্বনদেরও তীব্র সমালোচনা করে ছেন মেঘালয়ের রাজ্যপাল তথাগত রায়। তাঁদের নীতিবোধহীন বলে উল্লেখ করে তথাগত পোস্টে লিখেছেন, ধিক।
উল্লেখ্য, রাজ্যসভায় রাজ্যের নাম বদলের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেন সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্র সরকার রাজ্যের নাম ‘পশ্চিমবঙ্গ’ বদলে ‘বাংলা’ করার প্রস্তাবে ছাড়পত্র দিয়েছে কিনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে তা জানতে চান ঋতব্রত। যার উত্তরে নিত্যানন্দ রায় জানান, ‘না। রাজ্যের নাম পরিবর্তনের জন্য সংবিধান সংশোধনী প্রয়োজন’। অর্থাৎ সংবিধান সংশোধনীর কথা উল্লেখ করে রাজ্যের নাম বদলে ‘বাংলা’ করার প্রস্তাবে সিলমোহর দেয়নি কেন্দ্র। কিন্তু তারপরেই এই ব্যাপারে মেঘালয়ের রাজ্যপাল তথাগত রায় যেভাবে নিজের কৃতিত্ব দাবি করলেন তাতে স্পষ্ট, বাংলার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক চক্রান্ত করছে মোদী সরকার। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশও মনে করছেন, কেন্দ্রীয় অসম্মতির নেপথ্যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যই আসল।
বন্দ্যোপাধ্যায়ও তাৎপর্যপূর্ণভাবে রাজ্যের নাম বদল না হওয়ার জন্য বিজেপির রাজনীতিকেই দায়ী করেন। বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রের সুপারিশ মেনেই নাম বদলের প্রস্তাব পরিবর্তন করে পাঠানো হয়েছিল, এখন বিজেপি বলছে তা করতে দেবে না। তথাগতর পোস্ট সেটাকেই স্বীকৃতি দিল। বুঝিয়ে দিল, রাজ্যের নাম বদল আটকে যাওয়ার পিছনে আসল কারণ বিজেপির রাজনীতিই।