এর আগে জোর করে ‘জয় শ্রীরাম’ বলিয়ে এক মুসলিম ব্যক্তিকে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠেছিল আসামের বরপেটায়। একই ঘটনা ঘটেছিল ঝাড়খন্ড এবং দিল্লীও। বাদ যায়নি এ রাজ্যও। খাস কলকাতার পার্ক সার্কাসে ‘জয় শ্রীরাম’ বলতে রাজি না হওয়ায় এক মুসলিম যুবককে ট্রেন থেকে নামিয়ে দিয়েছিল ‘ভক্ত’রা। আর এবার ‘জয় শ্রীরাম’ না বলায় বছর এগারোর এক মাদ্রাসা-ছাত্রকে মারধরের অভিযোগ উঠল পুরুলিয়ার নিতুড়িয়ায়। কিশোরের অভিযোগ, বুধবার বিকেলে চার যুবক পথ আটকে তাকে ‘জয় শ্রীরাম’ বলার জন্য চাপ দেয়। রাজি না হওয়ায় তাঁকে মাটিতে ফেলে মারা হয়। বৃহস্পতিবার তাঁর বাবা নিতুড়িয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তখনই ঘটনার কথা জানাজানি হয়।
ওই ছাত্রটি জানিয়েছেন, এক বন্ধুকে বাসে তুলে দিয়ে মাদ্রাসায় ফিরছিল সে। পথ আটকায় বছর তিরিশের জানা চারেক। প্রথমে পরিচয় জানতে চায়। তার পর ‘জয় শ্রীরাম’ বলার জন্য চাপাচাপি করে। তাঁর অভিযোগ, ‘‘ওদের কথা না শোনায় লাথি, ঘুষি মারে। কাকুতি-মিনতি করছিলাম। শোনেনি। পরে ওদের এক জন বলল, ‘খারাপ কিছু হলে ফেঁসে যাব’। তার পরে মার থামে।’’ মাদ্রাসার মৌলানা বলেন, ‘রাত পর্যন্ত ঘুমোচ্ছে না দেখে ছেলেটাকে ডেকে কথা বলি। তখনই জানলাম, কী কাণ্ড হয়েছে।’ ছেলেটিকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যান তাঁর বাবা। তিনি বলেন, ‘কোন ভরসায় মাদ্রাসায় ছেলেকে রাখব? যদি আরও খারাপ কিছু হয়! বাড়ি ফিরেও ছেলে ভয়ে সিঁটিয়ে রয়েছে।’ গোটা ঘটনায় বিজেপির দিকেই আঙুল তুলেছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, মাসখানেক আগে কোচবিহারের তুফানগঞ্জে এক ব্যক্তিকে এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীর এক মাদ্রাসা শিক্ষককেও ‘জয় শ্রীরাম’ না বলায় নিগ্রহের অভিযোগ ওঠে। নিতুড়িয়ার মাদ্রাসাটির মৌলানা বলেন, ‘বুধবার যা ঘটল, তার পরে খুব অস্বস্তি হচ্ছে।’ আর এ ঘটনায় বিজেপির প্রতি ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো বলেন, ‘বিজেপি উগ্র হিন্দুত্বের জিগির তুলে সন্ত্রাস চালাচ্ছে।’ উল্লেখ্য, এবারের লোকসভা ভোটে পুরুলিয়ায় জয় পেয়েছে বিজেপি। ফল ঘোষণার দিন থেকেই জেলায় গেরুয়া বাহিনী গুণ্ডাগিরি শুরু করেছে বলে অভিযোগ তৃণমূলের।