জন্মের হার কমছে গোটা দেশে। এক সমীক্ষায় দেখা গেল আগামী দু’দশকের মধ্যে দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ০.৫ শতাংশে নেমে আসবে। এত দিন দেশের জনসংখ্যার বেশির ভাগই তরুণ বলে অর্থনীতিতে তার সুবিধা মেলার কথা বলা হত। এই কমতিতে যে সব রাজ্য সামনের সারিতে, তার মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গও। সরকারের আর্থিক সমীক্ষাতেই এই ছবি উঠে এসেছে।
২০৩০ থেকে সমাজে বয়স্কদের সংখ্যা বাড়তে থাকবে। যে সব রাজ্যে এই রূপান্তর প্রথমে শুরু হবে, তার মধ্যে থাকবে পশ্চিমবঙ্গ। সে কারণে অবসরের বয়স বাড়ানোরও সুপারিশ করছে সমীক্ষা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ রাজ্যে জন্মহার কমে যাওয়ার অনেক কারণ আছে। তার মধ্যে একটি অবশ্যই যে, পশ্চিমবঙ্গে পরিবার পরিকল্পনায় ভাল কাজ হয়েছে। আর একটি কারণ আর্থিক সমীক্ষাতেই বলা রয়েছে, মহিলাদের ক্ষমতায়ন। পারিবারিক সিদ্ধান্তগ্রহণে বিবাহিত মহিলাদের ভূমিকা বাড়ছে। পশ্চিমবঙ্গ প্রথম সারির রাজ্যগুলির মধ্যে রয়েছে। সাধারণত আয় বাড়লেই জন্ম নিয়ন্ত্রণ বাড়ে, প্রজননের হার কমে। পশ্চিমবঙ্গ আয়ের নিরিখে উপরের সারিতে যাওয়ার আগেই এই প্রবণতা দেখা দিয়েছে।
আর্থিক সমীক্ষা বলছে, পশ্চিমবঙ্গ-সহ বেশ কিছু রাজ্যে এখনই জন্মহার ১.৬ থেকে ১.৭-এ নেমে এসেছে। উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ডের মতো রাজ্যেও তা কমতে শুরু করেছে। বর্তমানে যে জনসংখ্যা রয়েছে, তা ধরে রাখতে জন্মহার যত হওয়া দরকার, পশ্চিমবঙ্গ-সহ ন’টি রাজ্যে ওই হার তার থেকেও কম।
ফলে আর্থিক সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০৪১-এ এই সব রাজ্যে চার ভাগের এক ভাগ জনসংখ্যার বয়স ২০-র কম হবে। কিন্তু ২০ শতাংশ জনসংখ্যার বয়স হবে ৫৯ বছরের বেশি। ২০২১ থেকে ২০৪১-এর মধ্যে স্কুল ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ১৮.৪ শতাংশ কমবে। আর্থিক সমীক্ষা অনুযায়ী, নতুন স্কুল তৈরির বদলে তাই একাধিক স্কুল মিশিয়ে ভাল স্কুল তৈরির দিকে নজর দিতে হবে।