এক সপ্তাহ ধরে তুমুল বৃষ্টিতে বানভাসি মুম্বই। রত্নগিরির নদীবাঁধ ভেঙে ভেসে গিয়েছে সাতটি গ্রাম। মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২০। নদীবাঁধ ভেঙে পড়ার পিছনে তার পরিকাঠামোগত ত্রুটিকেই দায়ী করেছেন এলাকাবাসী। অভিযোগ উঠেছে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার বিরুদ্ধেও। যাবতীয় জল্পনা, কল্পনার মধ্যেই এ বার আসরে নেমেছেন জল সংরক্ষণ মন্ত্রী তানাজি সাওয়ান্ত। রত্নগিরি বাঁধের দায়িত্বও ছিল তাঁর উপরে। মন্ত্রীর কথায়, “২০০৪ সালে তৈরি হয়েছে ওই বাঁধ। যথেষ্ট শক্তপোক্তই ছিল। এতদিন কোনও ফাটল দেখা যায়নি।” সেই সঙ্গেই মন্ত্রীর দাবি, “ইদানীং বাঁধের জলে কাঁকড়ার সংখ্যা বেড়েছিল। তারপরেই বাঁধে ফাটল দেখা দেয়। নাগাড়ে বৃষ্টিতে সেই ফাটলই বেড়ে বাঁধ ভেঙে পড়ে।”
নদীবাঁধে কোনও ত্রুটি ছিল না। বাঁধ ভাঙার জন্য দায়ী জলে কিলবিল করে ঘুরে বেড়ানো কাঁকড়ারা। তাদের জন্যই বাঁধে ফাটল ধরেছিল। মহারাষ্ট্রের শিব সেনা মন্ত্রী তানাজি সাওয়ান্তের এমন যুক্তিতে হাসির রোল উঠেছে সব মহলে।
গ্রামবাসীদের দাবি ছিল, পুরনো বাঁধটিতে গত বছরই ফাটল দেখেছিলেন তাঁরা। জেলা প্রশাসনকে বিষয়টি জানালেও বাঁধ মেরামত হয়নি। রত্নগিরির গ্রামোন্নয়ন দফতরের প্রধান মালিক সুভাষ খান্ডাগালে বলেছেন, “আপনি দুর্নীতিগ্রস্ত বড় বড় হাঙড়দের বাঁচাতে চাইছেন, আর দোষ চাপাচ্ছেন নিরীহ কাঁকড়াদের ঘাড়ে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। নদীবাঁধ কেন ভাঙল তার জন্য উচ্চপর্যায়ের তদন্ত শুরু হয়েছে। দোষীরা শাস্তি পাবেই।”
নদীবাঁধ ভাঙার কারণ অনুসন্ধানের জন্য তদন্তের দাবি তুলেছে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও। সিটের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীস।
মুম্বই পুরসভা জানিয়েছে, রবিবার রাত থেকে শহরে বৃষ্টি হয়েছে ৫৪০ মিলিমিটার। মুম্বইয়ের পুর কমিশনার প্রবীণ পরদেশির কথায়, শহরে জুন মাসে বৃষ্টি হয় গড়ে ৫১৫ মিলিমিটার। জুলাইয়ের শুরুতে দু’দিনেই ৫৪০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, রত্নগিরির চিপলুন তালুকের তিওয়ারে জলাধারটির ২০ লক্ষ ঘন মিটার জলধারণের ক্ষমতা রয়েছে। গত দু’দিনে এখানে বৃষ্টি হয়েছে ১৯২ মিলিমিটার। ফলে জলাধারের জল বেড়ে যায় ৪ মিটারের বেশি। যার কারণেই এটির দেওয়াল ভেঙে যায়। বন্যার তোড়ে ভেসে যায় প্রায় সাতটি গ্রাম।