সরকারি প্রকল্পে কাটমানি-কমিশন খাওয়া রুখতে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন, কোনও মতেই সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অনৈতিক ভাবে টাকা নেওয়া চলবে না। তবে এরই মধ্যে এবার কাটমানি চাওয়ার গুরুতর অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে। অভিযোগ, বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপির জয়লাভের পরই সরকারের পতিত জমিতে বসবাসের জন্য ৭০ থেকে ৭৫টি পরিবারের কাছে ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা করে চাওয়া হয়েছে। সেই টাকা না দেওয়ায় শক্তিগড় থানার অন্তর্গত স্বস্তিপল্লী দক্ষিণপাড়ায় এক মহিলার বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠেছে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। ওই মহিলার বাড়ির পাঁচিলও ভেঙে দেওয়া, বাড়ি ভাঙচুর করে বাড়ি থেকে সোনার গয়না, টাকাপয়সা লুঠপাট করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
পার্বতী পাল নামে ওই মহিলা সরাসরি বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে শক্তিগড় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। পাশাপাশি, এ ব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন এবং বর্ধমান আদালতেও মামলা দায়ের করেছেন তিনি। পার্বতীদেবী জেলা পুলিশ সুপার ও শক্তিগড় থানার পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন, দীর্ঘ আট বছর ধরে স্বস্তিপল্লী দক্ষিণপাড়ায় সরকারি পতিত জমিতে বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করেছেন তাঁরা। এই ঠিকানায় তাঁদের ভোটার কার্ড ও বৈদ্যুতিক সংযোগ রয়েছে। স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে ওই জমির পাট্টা দেওয়া হবে বলেও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি লোকসভা নির্বাচনে এই এলাকার রাজনৈতিক পটভূমি পরিবর্তনের পর স্থানীয় বিজেপি নেতা-কর্মীরা এখানে বসবাসের জন্য ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা দাবি করেছেন।
শুধু তাই নয়। তাঁরা এই এলাকার ৭০ থেকে ৭৫ জন মানুষের কাছ থেকেও এই ভাবে টাকা দাবি করে আসছেন। তাঁদের হুমকি, সরকারি পতিত জমিতে বাড়ি করে থাকতে হলে, তাদের দাবি মানতে হবে। ওই টাকা দিতে অস্বীকার করার পরেই বাড়িতে ঢুকে হামলা চালায় বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। তারা সোনা, টাকা-পয়সা ও জিনিসপত্র লুঠপাট করে বাড়ির পাঁচিল ভেঙে দেয়। কোনও মতে শক্তিগড় থানায় খবর পাঠালে পুলিশ এসে তাদের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করে। তবে পুলিশ চলে যাওয়ার পর থেকে ফের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। পরিবারের সকলকে প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এমনকী, এলাকা থেকে উচ্ছেদ করারও হুমকি দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ পেয়ে, ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।