প্রায় জলশূন্য হয়ে এসেছে চেন্নাই৷ জলকষ্টে ভুগতে শুরু করেছেন বাসিন্দারা৷ এই পরিস্থিতি যাতে কলকাতাকে গ্রাস না করে তার জন্য এখন থেকেই সতর্কতা নিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ গ্রামাঞ্চলের মত এবার শহরেও শুরু হতে চলেছে ‘জল ধরো জল ভরো’ প্রকল্প৷
নগরোন্নয়নেও এবার গুরুত্ব পাচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের ‘জল ধরো জল ভরো’ প্রকল্প। বুধবার বিধানসভায় পুর দফতরের বাজেট আলোচনায় পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, কলকাতা–সহ ১৫ পুরসভায় শুরু হবে এই ‘জল ধরো জল ভরো’। পুরমন্ত্রী বলেন, ‘চেন্নাই–সহ অন্যান্য শহরের হাল দেখে শিক্ষা নেওয়া উচিত। জল–সঙ্কট যেদিকে এগোচ্ছে, তাতে এ ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। আগামী অর্থ বছরের মধ্যেই এ কাজ শুরুর পরিকল্পনা নিয়েছি।’
সাধারণ মানুষের কাছেও ফিযহাদের আবেদন, ভবিষ্যতের কথা ভেবে এখনই দলমত নির্বিশেষে সবাই সচেষ্ট হোন। এদিকে, শহরে এবার ‘কার ওয়াশিং জোন’ তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে কলকাতা পুরসভা। বৃষ্টির জল ও অপরিস্রুত জল সংরক্ষণ করে তৈরি করা হবে গাড়ি ধোয়ার জায়গা। বুধবার কলকাতা পুরসভাতেও এ কথা জানিয়েছেন মহানাগরিক। তিনি বলেন, ‘এই শহরে এখনও পরিস্রুত পানীয় জল দিয়ে গাড়ি ধোয়া হয়। গাড়িটা অপরিস্রুত জল দিয়েও ধোওয়া যায়। পুরসভা বৃষ্টির জল, অপরিস্রুত জল সংরক্ষণ করবে। যাতে সেই জল গাছে দেওয়া, গাড়ি ধোয়ার কাজে ব্যবহার করা যায়। এর জন্য শহরে আলাদা জায়গা তৈরি করবে কলকাতা পুরসভা। আবাসনগুলির কাছে আবেদন, বৃষ্টির জল সংরক্ষণ করুন। কলকাতাকে চেন্নাই হতে দেব না।’
পুরমন্ত্রী বলেন, ‘ইতিমধ্যে ১৫ পুরসভায় ডব্লুবিসিএস অফিসারকে দায়িত্বে বসিয়েছি। অফিসার কম। অন্যত্রও বসবে। ৯০ পুরসভায় সরকার ফিনানশিয়াল অফিসার নিয়োগ করেছে। সর্বত্র এটা হবে। হবে, স্বচ্ছতা ও প্রশাসনিক সংস্কারের জন্য।’
এর আগে বিধানসভা নিজে জলসঙ্কটের কথা মাথায় রেখে ‘জল ধরো জল ভরো’ প্রকল্পে গতি আনতে বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানিয়েছিলেন, ১০০ দিনের মানুষ এই প্রকল্পের কাজ করছে। বন্যার সময় জল ধরো জল ভরো প্রকল্পের অধীনে খনন করা পুকুর খুব কার্যকরী হয় বলে দাবি করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে তিনি বলেন, বন্যার সময় এই জল ধরে রেখে গরমের সময় এই জল কাজে লাগে।
জানা গেছে, তাদের ৫০ হাজার জল ধরো জল ভরো প্রকল্পে পুকুর কাটার লক্ষ্যমাত্রা ছিল। কিন্তু সেই লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে গিয়েছিল রাজ্য। শেষ আট বছরে তিন লক্ষ পুকুর কাটা হয়েছিল। ৫০০ কোটি টাকা খরচ করে চেকড্যাম করা হয়েছে। এই চেকড্যাম এবং জল ধরো জল ভরো প্রকল্পের মাধ্যমে একদিকে যেমন পরিবেশ বাঁচবে তেমনি চেন্নাইয়ের মত হাহাকারও করতে হবে না৷