চলতি বছরের শুরুতেই জাতীয় তফশিলি জাতি কমিশনের দাবি ছিল, অনগ্রসর শ্রেণির উন্নয়নের মাধ্যমে সামাজিক ন্যায় বিকাশের পথে সারা দেশের রোল মডেল হবে বাংলাই। অনগ্রসর শ্রেণির উন্নয়নে মমতার রাজ্যই অন্য রাজ্যগুলিকে দিশা দেখাবে। এবার কেন্দ্রীয় রিপোর্টও সে কথাই জানিয়ে দিল। দিন দুয়েক আগেই রাজ্যবাসীকে সুখবর দিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। তিনি জানিয়েছিলেন, জিএসটি আদায়ে দেশের মধ্যে নজির গড়েছে বাংলা। আর গতকাল কেন্দ্র জানাল, সমাজের তফসিলি জাতির (এসসি) উন্নয়নে দেশের মধ্যে ফের সেরা বাংলাই।
জানা গেছে, এবার এসসিদের উন্নয়নের বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়ণে দেশের প্রত্যেকটি রাজ্যের মধ্যে থেকে সেরা হয়েছে বাংলার সংস্থা। রাজ্যকে এই স্বীকৃতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা জাতীয় তফসিলি জাতি বিত্ত ও উন্নয়ন নিগম (এনএসসিএফডিসি)। মঙ্গলবার সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং এ কথা জানিয়েছেন। ঘটনাচক্রে গতকালই রাজ্যের তফসিলি জাতি ও উপজাতিভুক্ত বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। টুইটারে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, ‘আমি আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি, তফসিলি জাতির উন্নয়নে অসামান্য অবদানের জন্য বাংলাকে প্রথম পুরস্কারে সম্মানিত করেছে এনএসসিএফডিসি। ২০১৭-১৮ আর্থিক বছরের ফলাফলের ভিত্তিতে রাজ্য এই সম্মান পেয়েছে।’
তবে এসসিদের উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়ণে রাজ্য শুধু ‘ভাল’ কাজই করেনি, দেশের মধ্যে সেরাও হয়েছে বাংলার এসসি, এসটি এবং ওবিসি উন্নয়ন এবং বিত্ত নিগম (ডব্লিউবিএসসিএসটি অ্যান্ড ওবিসিডিএফসি)। গত ২৪ জুন দিল্লি থেকে সল্টলেকে ডব্লিউবিএসসিএসটি অ্যান্ড ওবিসিডিএফসির দফতরে চিঠি লিখে একথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর এই সাফল্যের জন্য কেন্দ্র থেকে ৭ লক্ষ টাকা ইনসেনটিভ পেয়েছে রাজ্যের এই সংস্থাটি। গতকাল এ কথাও আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী বারবারই বলে থাকেন ‘এগিয়ে বাংলা’। তাঁর দাবি যে একেবারেই নির্ভুল, ফের তার প্রমাণ মিলল কেন্দ্রীয় রিপোর্টে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের শুরুতে হওয়া জাতীয় তফশিলি জাতি কমিশনের পর্যালোচনা বৈঠকেই জানা গিয়েছিল, বাংলায় সরকারি চাকরিতে ২২ শতাংশ পদ তফশিলি জাতিদের জন্য সংরক্ষিত। পাশাপাশি, রাজ্য সরকার তফশিলি জাতি-উপজাতি ও ওবিসিদের জন্য বিশেষ নিয়োগও চালায়। এর ফলে সরকারি চাকরিতে তপশিলি জাতিভুক্তদের নিয়োগের হার ১৮ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এমনকী, একশো দিনের কাজের প্রকল্পে রাজ্যে উপকৃতদের তালিকায় রয়েছেন ২৬.৫৩ শতাংশ তপশিলি জাতিভুক্ত। যা সরকারি সংরক্ষণ সীমা অর্থাৎ ২২ শতাংশও ছাপিয়ে যায়।