লোকসভা ভোট এখন অতীত। সামনেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তাই দল যে পরবর্তী ভোটযুদ্ধের জন্য পুরো দমে প্রস্তুত, তা বুঝিয়ে দিতে ২১ জুলাইয়ের ঐতিহাসিক মঞ্চকেই বেছে নিয়েছে তৃণমূল। ইতিমধ্যেই দলের সব স্তরের নেতা-কর্মীরা প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন। মিটিং, মিছিলও শুরু হয়ে গেছে। জানা গেছে, ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে এবার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্লোগান হবে— ‘গণতন্ত্র ফিরিয়ে দাও, মেশিন নয় ব্যালট চাই।’
প্রসঙ্গত, লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকেই ইভিএম নিয়ে কার্যত বৃহত্তর আন্দোলনের ঘোষণা করে দিয়েছেন মমতা। লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার দিনই মুখ্যমন্ত্রী ইভিএম নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ করে বলেছিলেন, ‘ইভিএমে কারচুপি হয়েছে। তা না হলে বিজেপি ১৮টি আসন পেতে পারে না। আগে থেকেই সব প্রোগ্রামিং করা হয়েছিল। হাজার হাজার কোটি টাকা বিজেপি এই নির্বাচনে খরচ করেছে। নির্বাচন কমিশনে বহু অভিযোগ জানিয়েও কোনও বিচার পাওয়া যায়নি।’
ওইদিনই তিনি এ-ও বলেন, ‘ইভিএমের পরিবর্তে আমরা ব্যালট চাই। ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে আমরা এই দাবি তুলব। আমেরিকায় ইভিএম বাতিল করা হয়েছে। এখানে হবে না কেন?’ তারপর নবান্ন থেকেও তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, ‘গণতন্ত্র বাঁচাও ব্যালট ফেরাও’, ‘মেশিন চাই না ব্যালট চাই’- এর মতো স্লোগানের মাধ্যমে সারা দেশে আন্দোলন সংগঠিত করবে তৃণমূল। সেই মতো ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকেও সেই স্লোগান তুলবেন মমতা।
ইতিমধ্যেই তৃণমূল যুব কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সর্বভারতীয় সভাপতি তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দফায় দফায় প্রস্তুতি মিটিং করছেন। জেলায় জেলায় সিডি পাঠানো হয়েছে। সেই সিডিতে হোর্ডিংয়ে কী থাকবে তা রয়েছে। দায়িত্বও ভাগ করে দেওয়া হচ্ছে। দলের পক্ষ থেকে জেলায় জেলায় এই নির্দেশও পাঠানো হয়েছে, প্রতিদিন মিটিং, মিছিল করতে হবে। বিজেপির বিরুদ্ধে বলতে হবে। পাশাপাশি বাংলার উন্নয়নের কথাও মানুষকে জানাতে হবে।
জানা গেছে, আগামী শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী বাঁকুড়া ও ঝাড়গ্রামের নেতাদের সঙ্গে তৃণমূল ভবনে বৈঠক করবেন। ১১ জুলাই তিনি দলের বিধায়কদের সঙ্গে বসবেন। পাশাপাশি, দূর-দূরান্ত থেকে যাঁরা আসবেন তাঁরা কোথায় থাকবেন তা নিয়েও আলোচনা চলছে। যেহেতু এবার মিলনমেলায় থাকা যাবে না। তাই সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্ক, কসবার গীতাঞ্জলি স্টেডিয়াম-সহ অনেক জায়গায় দূরের কর্মীদের রাখা হবে।
সবমিলিয়ে, সাংসদ, বিধায়ক, কাউন্সিলর-সহ দলের সব স্তরের নেতারা ২১ জুলাইয়ের সভাকে সফল করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। কয়েক দিনের মধ্যেই ধর্মতলায় ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে মঞ্চ বাঁধার কাজ শুরু হবে।