অভিনেত্রী জায়রা ওয়াসিম দঙ্গল ও সিক্রেট সুপারস্টারের জন্য বিখ্যাত। কাশ্মিরের মেয়ে। জায়রা কাল একটা খোলা চিঠি লিখে চলচ্চিত্র দুনিয়া থেকে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। এমনকি তার সিনেমার ছবিগুলো ও মুছে ফেলেছে প্রোফাইল থেকে।
জায়রা লিখেছে সিনেমা নাকি ইসলামের ও তার ধর্মীয় ইমানের পরিপন্থী আর সেটা তার পক্ষে চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না।
চমৎকার যুক্তি। অবশ্যই সিনেমা ইসলাম বিরোধী। কিন্তু তাতে টুইস্ট আছে। শাহরুখ খান, সলমান খান, নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকী তো পুরুষ মানুষ। তাই ওটা জায়েজ। মেয়ে হলেই সেটা আল্লাহর সাথে বেইমানি। তাই তো ফতোয়া জারি হয় ক্যাটরিনা কাইফ, হুমা কুরেশির নামে৷
তাই হয়তো বেইমান মধুবালাকে এতো তারাতাড়ি মারা যেতে হয়। তাই শাবানা আজমি দুশ্চরিত্রা। তাই তাবাসসুম ফাতিমাকে টাব্বু নামে অভিনয় করতে হয় পাছে মোল্লা সাহেব লাল চোখ দেখান। তাই হয়তো আয়েশা টাকিয়া বা দিয়া মির্জাকে সম্বোধিত করা হয় বাজারি মেয়ে বলে।
অবাক হবেন না যদি কাল জায়েরা ওয়াসিম কে তালিবানি ফতোয়া মেনে তাঁবুর মতো বোরখা পরতে দেখেন। অবাক হবেন না যদি ১৯বছর বয়সী জায়েরাকে দেখেন ৮০ বছরের কোন মৌলবি সাহেবের চতুর্থ স্ত্রী হচ্ছেন। পাঁচটি ছেলেমেয়ের জননী হচ্ছেন।
ধন্যবাদ জায়রা ওয়াসিম। ভারত উপমহাদেশের মুসলিম মেয়েদের আরো দু কদম পিছিয়ে দেওয়ার জন্য৷ তারা আপনার ওই সিক্রেট সুপারস্টার চরিত্রটির মতো হতে চাইছিল। বোরখা পরে গিটার হাতে নিজের গান আপলোড করছিল মোল্লাতন্ত্রের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে। যারা ভেবেছিল মুক্ত বাতাস এলেই দমবন্ধ আবরনটা ছুঁড়ে ফেলে দেবে। যারা আত্মবিশ্বাসী ছিল যে হাফপ্যান্ট পরে তারা ও কুস্তি লড়তে পারে৷ তারা ও গোল্ড মেডেল জিততে পারে।
ধন্যবাদ জায়রা ওয়াসিম আমাদের উপলব্ধি করাবার জন্য যে সিনেমা সিনেমাই হয়৷ সেখানে আপনি যতোই বিপ্লবী, মুক্তমনা, মোল্লাতন্ত্র নাস্তানাবুদ করুন না কেন, আদপে আপনি পুরুষতন্ত্রের সেবাদাসীই। বোরখা পরুন, ঘরে কাজে একটু এদিক ওদিক হলে বরের হাতে নিয়মিত মার খেয়ে সিধে হোন, বিশ্বাস করতে শিখুন- সিনেমা শিল্পকলা হারাম। এ আপনার ইমানের পরিপন্থী।
জায়রার প্লেনের মধ্যে শ্লীলতাহানির ঘটনাটা মনে আছে? অভিযোগ ছিল, বিমান কেবিনের লাইট ডিম হতেই ঘুমিয়ে পড়ে সে। ঘুমের মধ্যেই সে টের পায় তার ঘাড় ও পিঠে আপত্তিকর ভাবে পা দিচ্ছেন পিছনে বসা ব্যক্তি। হ্যাঁ!!! ইন্ডিগোর সিটের ফাঁক দিয়ে গোটা পা দিচ্ছে গলায়। প্রশ্ন ছিল, মোটা হুমদো ওই লোকটিকে Aerobics জানতেন? যারা প্লেনে বা ভলবো বাসে চড়েন জানেন, দুটো সিটের মাঝে কতটুকু জায়গা থাকে। যাই হোক তথ্য ও সাক্ষীর বয়ান দেখে কোর্ট “ভদ্র”লোকটিকে খালাস করে দেয়। পুরুষটির কেউ খোঁজ নেয় নি, কেউ প্রচার করেনা পুরুষটি নির্দোষ ছিল, কেউ আওয়াজ তোলে না মেয়েটির বিরুদ্ধে। ভয় পাছে নারীবিরোধী বা ইসলামবিরোধী হয়ে পরি।
মতামত লেখকের ব্যক্তিগত