বার্মিহামের এজবাস্টন ক্রিকেট গ্রাউন্ড। কিংবদন্তী ক্রিকেটার ব্রায়ান লারার বিশ্বরেকর্ডের মাঠ বলেই পরিচিত। ১৯৯৪ সালে এই মাঠেই অপরাজিত ৫০১ রান করেছিলেন তিনি। তবে ব্যাট হাতে বাইশ গজে না নেমেও আজ এ মাঠেই হাজার হাজার দর্শকের মন জিতে নিলেন এক বাঙালি। না শুধু বাঙালি বললে কমই বলা হয়। বলা ভাল, আজ ভারত-বাংলাদেশের বিশ্বকাপের ম্যাচে প্রথম ছক্কাটা হাঁকালেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সৌজন্যে তাঁর সৃষ্ট দু’দেশের দুই অনবদ্য জাতীয় সঙ্গীত।
টস হয়ে গেছে। ভারতীয় ঘড়ির কাঁটা বলছে, সময় ৩টে। দু’দেশের ক্রিকেটাররাই তখন এসে দাঁড়িয়েছেন মাঠে। আর ঠিক তারপরই দৈবাবাণীর মতো চারপাশ কাঁপিয়ে বেজে উঠল – ‘জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে, ভারতভাগ্যবিধাতা!’ রবি ঠাকুরের লেখা এবং সুরারোপিত ভারতের জাতীয় সঙ্গীত। উঠে দাঁড়িয়ে ভারতীয় প্লেয়ারদের সঙ্গে গলা মেলাল গোটা গ্যালারি। যেন ভারত মাতার বন্দনার পাশাপাশি রবি ঠাকুরেরও ‘গীতাঞ্জলি’ করছে এজিবাস্টনের গ্যালারির এক টুকরো ভারত।
খানিক পরেই শেষ হল ভারতের জাতীয় সঙ্গীত। এক মুহূর্তের নিস্তব্ধতা। আর তারপরেই ফের রাবীন্দ্রিক হয়ে উঠল বার্মিহামের আকাশ-বাতাস। বেজে উঠল সেই রবি ঠাকুরেরই রচিত বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত, ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি/ চিরদিন তোমার আকাশ, তোমার বাতাস আমার প্রাণে বাজায় বাঁশি।’ বাংলাদেশী প্লেয়ার এবং দর্শকদের স্পষ্ট উচ্চারণে যেন সেই সুদূর বিলেতেও স্নেহ-মায়ার আঁচল বিছিয়ে দিল বাংলা মা। ভারতের জয়গান আর বাংলা মায়ের বন্দনা, ওপেনিংয়েই এমন দুই ইনিংস উপহার দিয়ে আজকের খেলার ম্যান অব দ্য ম্যাচ কিন্তু রবীন্দ্রনাথই।