মহাত্মা গান্ধীর ছবি এতদিন আমরা দেখেছি ভারতীয় নোটে। কিন্তু জাতির জনকের ছবি বিয়ারের বোতলে! এও কি সম্ভব? হ্যাঁ এমনটাই লক্ষ্য করা গেছে ইজরায়েলের একটি বিয়ার কোম্পানির বোতলে। তাও সেই চিরপরিচিত ধুতি আর লাঠি হাতে নয়। এই ছবিতে তাঁর চোখে রয়েছে সানগ্লাস, পরনে টি-শার্ট, ওভার কোট। যে মানুষটির সারা জীবনের দর্শন সংযম ও নিরাসক্তির, তাঁর ছবি এবার বিয়ারের বোতলে। সুতরাং বিতর্ক তো হবেই। আর হয়েছেও তেমনই। এই ছবি প্রকাশ্যে আসার পরেই উত্তাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া।
ঘটনার সূত্রপাত ইজরায়েলে। সেখানকার একটি বিয়ারের কোম্পানি মকা ব্রিউয়ারি। তাদেরই কিছু বিয়ারের বোতলে এবার ঐতিহাসিক নেতাদের ছবি ছাপা হয়েছে। নানা পণ্যের বিজ্ঞাপন তো নানা রকম হয়, নানা চমকও থাকে আজকাল, তবে এমন একটি চমক অনেকেই মেনে নিতে পারছেন না। তাই বিষয়টি এবার চরম বিতর্কের সৃষ্টি করেছে।
রবিবারই পুরো ঘটনাটির বিবরণ দিয়ে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে চিঠি লিখে জানিয়েছেন মহাত্মা গান্ধী ন্যাশনাল ফাউণ্ডেশনের চেয়ারম্যান ইবি জে যশ। যশ ক্ষোভের সাথে জানিয়েছেন, “এটা খুবই গর্হিত একটা কাজ করা হয়েছে। এর কোনও মানে নেই।” তিনি আরও বলছেন, এই বিজ্ঞাপনের ডিজাইন যিনি করেছেন, তাঁর নাম অমিত শিমোনি। এই অন্যায়ের যথাযোগ্য ব্যবস্থা যাতে নেওয়া হয় সেই দাবিও করছেন তিনি।
কেরলের কোট্টায়ামের মহাত্মা গান্ধী ন্যাশনাল ফাউণ্ডেশনের চেয়ারম্যান আরও বলছেন, গান্ধীজিকে যেভাবে দেখানো হয়েছে, তা খুবই লজ্জাজনক। তাঁর মতো একজন ব্যক্তিত্বকে নিয়ে কার্যত ঠাট্টা করা হয়েছে বলে তিনি মনে করেন। এই তামাশা অর্থহীন এবং শাস্তিযোগ্য বলছেন তিনি। যশ বলছেন, বিশ্বের দরবারে মহাত্মা একজন মনিষী। তাই সেই বিয়ার কোম্পানির ওয়েবসাইটে এ জাতীয় ছবি একেবারেই কাম্য নয়। তাই মোদীর কাছে তাঁর পাঠানো চিঠির গুরুত্ব বিবেচনা করা হোক বলেও দাবি করছেন তিনি। এখন দেখার যশের এই অভিযোগের ভিত্তিতে আদৌ বাস্তবক্ষেত্রে ভারত সরকার বা ইজরায়েল সরকার কোনও ব্যবস্থা নেয় কি না।
তিনি আরও বলেন, মহাত্মা গান্ধী একদিন বলেছিলেন, তাঁর হাতে ক্ষমতা থাকলে তিনি দেশের সমস্ত মদের উৎপাদন বন্ধ করে দিতে চান, তাঁকে এভাবে বিয়ারের বোতলে টেনে আনলে তা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না।