তিন তালাক নিয়ে দেশে ইতিমধ্যেই বিতর্কের ঝড় বয়ে গেছে। তবুও বন্ধ করা যায়নি এই প্রথা। ফলতঃ এই প্রথা ক্রমশঃ অপরাধের পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। তিন তালাক নিয়ে আবার জঘন্য ঘটনা ঘটলো এবার নাগপুরে। ঘরের সবজি কেনার জন্য স্বামীর কাছে ৩০ টাকা চেয়েছিলেন এক মহিলা। সেই টাকা দেওয়া তো দূরের কথা, এই ‘অপরাধের’ জন্য মাঝ রাস্তায় ওই মহিলাকে মারধর করে তিন তালাক দিয়ে দিলেন তাঁর স্বামী। গুরুতর আহত অবস্থায় সেই মহিলাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এই জঘন্য ঘটনাটি ঘটেছে নয়ডার রাওজি বাজারে। আক্রান্ত মহিলার নাম জায়নাব। পুলিশ সূত্রের খবর, ঘটনাটি ঘটেছে গত শনিবার। অভিযুক্ত সাবিরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, দাদরি এলাকার নয়ী আবাদি এলাকায় চার সন্তান ও স্ত্রী জয়নাবকে নিয়ে থাকেন সাবির। যৌথ পরিবার হওয়ায় প্রায়ই অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে মনোমালিন্য চলত জায়নাবের। অভিযোগ, ঘটনার দিন রাওজি বাজারে স্বামীর সঙ্গে যান তিনি। সেখানে সবজি কেনার জন্য ৩০ টাকা চাইতেই রেগে যান সাবির। বেধড়ক মারধর করেন স্ত্রীকে। তারপরই তাঁকে তিন তালাক দিয়ে দেন সাবির। ঘটনার কথা জানতে পেরে জায়নাবের দুই ভাই এসে তাঁকে উদ্ধার করে এবং হাসপাতালে নিয়ে যায়।
জায়নাবের অভিযোগ, “স্বামীর সঙ্গে দেওর, ননদ ও শাশুড়িও আমাকে মারধর করেন। আমাকে শক দেন তাঁরা। প্রবল অত্যাচারে অসুস্থ হয়ে পড়ি আমি। তারপর আমার মুখে থুতু দিয়ে আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন আমার স্বামী।” তাঁর বাবা মোরসলিমের অভিযোগ, ঘটনার সময় তাঁর মেয়েকে মারধরের পাশাপাশি তাঁর কানের দুলও কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন তাঁর শ্বাশুড়ি। কিন্তু বাবার দেওয়া উপহার না খোলায় আরও হেনস্তার মুখে পড়তে হয় জায়নাবকে। তাঁকে তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন মারধর করেন। তাঁর ৯ বছর বিয়ে, চারটি সন্তান থাকলেও স্বামী সাবিরের সঙ্গে সম্পর্ক বিশেষ ভাল ছিল না বলে জানিয়েছেন জায়নাবের বাবা। তিনি জানান, দু’বছর আগে একবার নিজের স্ত্রীর মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করেছিল সাবির।
কয়েকবছর আগে জায়নাব অসুস্থ হওয়ায় তাঁকে বাপের বাড়িতে রেখে আসে সাবির। ৫-৬ দিন পর জায়নাব ফিরে গেলে তখনও তাঁকে বাড়িতে ফেরাতে অস্বীকার করা হয়। সাবির ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে দাদরি থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সাবির ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট থেকে জামিন পেয়ে যাওয়ায় প্রশ্ন তুলেছে জায়নাবের পরিবার। তাঁদের দাবি, সাবিরকে সুরজপুর আদালতে পেশ করা উচিত ছিল। এই ঘটনা নিয়ে পুলিশ প্রশাসন বিশেষ কিছু বলতে চাননি। তবে জানা গেছে, এই কেস পরিবার আদালতে পাঠানো হবে।