গোটা ভোট মরশুমেই তাঁর নানা মন্তব্যের জন্য বিতর্কের শিরোনামে ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। কোথাও গিয়ে বলেছেন, ‘মারব এখানে, লাশ পড়বে যেখানে সেখানে।’ তো কোথাও গিয়ে বলেছেন, ‘হাতে বাঁশ নিয়ে রেডি থাকুন। এমন মারুন, যাতে হাসপাতালে যেতে না হয়। স্পটেই হিসেব বরাবর হয়ে যায়।’ আবার তাঁকে এ কথা বলতেও শোনা গেছে যে, ‘তৃণমূলের ওষুধ তৈরি আছে। তৃণমূল কর্মীদের ডেথ সার্টিফিকেট লিখে দেব আমি!’ তবে ভোট মিটতেও থামেননি মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ। বরং আরও ছোটাচ্ছেন তাঁর বিতর্কিত মন্তব্যের ফোয়ারা। এবার পুলিশকে হুমকি দিলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, শুরুটা হয়েছিল লোকসভা নির্বাচনে আগে থেকেই। পুলিশকে নিশানা করে রাজ্য বিজেপি-র নেতানেত্রী থেকে বিজেপি সাংসদ সকলেরই এক হুমকি, সাবধান পুলিশ! আগামী বিধানসভা নির্বাচনের পর তা না হলে মুশকিল আছে! সেই সুরই শনিবার আরও একবার শোনা গেল দিলীপ ঘোষের গলায়। গতকাল কেশপুরে কর্মীসভায় তিনি বলেন, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় এলে পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিজেপির রাজ্য সভাপতির বক্তব্য থেকে এটা স্পষ্ট যে এবার তাঁরা পুলিশকে ধাওয়া করবেন।
উল্লেখ্য, পুলিশকে নিশানা করে কেশপুরে দাঁড়িয়ে এর আগে গত এপ্রিল মাসেই নির্বাচনী প্রচারের সময়ে হুমকি দিয়েছিলেন, প্রাক্তন পুলিশ কর্তা তথা বিজেপি নেত্রী ভারতী ঘোষ। তার আগে মার্চ মাসে রাজ্যে অপর সাংসদ তথা মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় সেই পুলিশেকই করে ছিলেন সাবধান। তিনি বলে ছিলেন, ‘নিজেদের আইপিএস ব্যাচের কথা ভুলে গিয়ে, নিজেদের উর্দির কথা ভুলে গিয়ে, যাঁরা নির্লজ্জ রাজনীতি করছেন, যারা নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের চামচাগিরি করেন, তাঁদের উচিত শিক্ষা দেওয়া হবে। আপনাদের সামনেই তা দেওয়া হবে।’
আবার এই পুলিশকেই সামনে রেখে রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু এই ‘ইউপি মডেল’-এর উল্লেখ করে, উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটে বলেছিলেন, ‘কোনও দুষ্কৃতীকে রেয়াত করা হবে না। হয় গ্রেফতার করা হবে, নয়তো এনকাউন্টার করে মারা হবে। এ ছাড়া কোনও পথ নেই। অপরাধ করে কোনও দুষ্কৃতীকে বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে না।’ আর এবার সেই পথে হেঁটেই পুলিশকে হুমকি দিলেন দিলীপ ঘোষ। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে সমালোচনার ঝড়।