কাটমানি নেবেন না। আয়নায় নিজেদের মুখ দেখুন। ভুল শুধরে নিন।’ শুক্রবার পশ্চিম মেদিনীপুরের তৃণমূল জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে এভাবেই হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিনের বৈঠকে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও পশ্চিম মেদিনীপুর-সহ জঙ্গলমহলে তৃণমূলের পর্যবেক্ষক তথা পরিবহন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী, সাংসদ ও অভিনেতা দেব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিনের বৈঠকের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক মেজাজে ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে কাটমানি সংক্রান্ত অভিযোগ এলে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করবে এবং আইন মেনে যথাযথ ব্যববস্থাও নেওয়া হবে বলেও সাফ জানিয়ে দেন তিনি। পাশাপাশি জনসংযোগে ব্যর্থ হওয়ায় জেলার নেতাদের কার্যত তুলোধনা করে মমতা বলেন, ‘‘মানুষের কাছে না যাওয়ায় লোকসভা নির্বাচনে দলের এই বিপর্যয় হয়েছে৷ দলে থাকতে হলে সঠিক ভাবে কাজ করতে হবে৷ কেউ তা না মানতে চাইলে, দল থেকে বেরিয়ে যেতে পারেন।’
এদিনের বৈঠকে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার জন্য নয়া কোর কমিটিতে তৈরি করে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ যার মাথায় বসানো হয়েছে রাজ্যের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীকে৷ এছাড়া কমিটিতে রাখা হয়েছে দলের রাজ্যসভার সাংসদ মানস ভুঁইয়া, নির্মল ঘোষ ও অমূল্য মাইতিকে৷ এখানেই শেষ নয়, জেলার তফসিলি সেল ও মহিলা সেলের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে শিউলি সাহাকে৷ সংখ্যালঘু সেলের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কওসর আলি খানকে৷ তৃণমূলের শ্রমিক সেলের নেতা করা হয়েছে নির্মল ঘোষকে৷ এবং সভানেত্রী করা হয়ে উত্তরা সিংকে৷ এছাড়া নেত্রীর নির্দেশ, এবার থেকে সপ্তাহে একবার করে বৈঠকে বসতে হবে কোর কমিটিকে৷ জেলার কাজকর্ম কেমন এগোচ্ছে, সেই খবরা খবর রাখতে হবে কমিটির সদস্যদের৷ অঞ্চল ও বুথ কমিটি তৈরি করতে হবে৷
এদিনের বৈঠকে বেশ কয়েকজন নেতার নাম ধরে ধরে ভর্ৎসনাও করেন মমতা। এই সব নেতার জন্য দলকে ভুগতে হচ্ছে বলে ক্ষোভ উগড়ে দেন মমতা। মানুষের সঙ্গে খারাপ ব্যবহারের জন্য এই বিপর্যয় বলে সরাসরি মন্তব্য করেন তিনি। এরপরই তৃণমূলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে মমতার বার্তা, ‘আয়নায় নিজেদের মুখ দেখুন।’