প্রশ্নের সম্মুখীন হতে বরাবরই ভয় পান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর প্রথম ইনিংসে সাংবাদিকদের যত সম্ভব এড়িয়ে গিয়েছেন তিনি। আর এবার দ্বিতীয় ইনিংসের একেবারে শুরুর লগ্নেই নানা প্রশ্নের মুক্ত জবাব না দিয়েই সংসদ থেকে পালালেন মোদী। গতকাল এ নিয়েই তাঁকে কটাক্ষ করল তৃণমূল। একইসঙ্গে টার্গেট পূরণ করতে না পেরেই বিজেপি বাংলাকে রাজনৈতিকভাবে অশান্ত করার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। লোকসভায় এসইজেড বিলের বিরোধীতা থেকে শুরু করে জল সংরক্ষণ নিয়ে আলোচনায় মোদী সরকারের সমালােচনায় যেমন সরব হল তৃণমূল, তেমনি তুলে ধরা হল বাংলায় মমতার নানা উন্নয়নমূলক উদ্যোগের কথা।
প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রপতির অভিভাষণের ওপর ধন্যবাদ জ্ঞাপনের জবাবি ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এক ঘণ্টারও বেশি সময় বক্তৃতা দিলেও তাঁদের তোলা যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোয় হস্তক্ষেপের প্রসঙ্গ, রাজ্যকে পাঠানো অ্যাডভাইসরি, ভোটে বিজেপির টাকার উৎস, কৃষক সমস্যার মতো কোনও কিছুরই নির্দিষ্ট জবাব দেননি বলে তৃণমূলের দাবি। গতকাল এক সাংবাদিক সম্মেলনে তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা তথা প্রধান জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়ান বলেন, তৃণমূল যেসব প্রশ্ন তুলেছিল, প্রধানমন্ত্রী তার একটিরও স্পষ্ট জবাব দেননি। পালিয়ে গেলেন। তবে আজ যতই চলে যান, সংসদে হােক বা সড়কে, তৃণমূলের ভােলা প্রশ্নের উত্তর নরেন্দ্র মােদীকে দিতেই হবে।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতার সমালোচনা করে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় রীতিমত তোপ দেগে বলেন, ঝাড়খণ্ডের গণ পিটুনির সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী বাংলা, কেরলের তুলনা করার আগে জবাব দিন, বাংলায় কারা গােলমাল করছে? কারা তৃণমূল কর্মীদের খুন করছে? কারা পার্টি অফিস লুট করছে? মোদী-অমিত শাহর পাঠানো লােকজনই বাংলাকে অশান্ত করার চেষ্টা করছে। সৌগত এ-ও বলেন, ওরা বাংলায় ২৩টা আসন পাবে বলে স্বপ্ন দেখেছিল। কিন্তু টার্গেট পূরণ হয়নি বলেই অশান্তি ছড়াচ্ছে। অন্যদিকে, লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের আনা ‘দ্য স্পেশাল ইকোনমিক জোনস (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল ২০১৯’ -এর বিরােধীতা করে বলেন, কোনওভাবেই সরকারের এই বিল তৃণমূল সমর্থন করছে না।
শুধু তাই নয়। জল সংরক্ষণ নিয়ে আলোচনায় অংশ নিয়ে রাজ্যসভায় তৃণমূল সাংসদ মানসরঞ্জন ভুঁইয়াও মোদী সরকারের সমালোচনা করেন। এভাবেই মোদী সরকারের দ্বিতীয় ইনিংসের শুরু থেকেই জোরদার বিরোধীতা শুরু করল তৃণমূল। তারা বুঝিয়ে দিল, কেন্দ্রের নানা গা-জোয়ারি সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করে বারবারই গর্জে উঠবে মমতার দল।