আফগানদের বিরুদ্ধে ঠিক যেখানে শেষ করেছিলেন শামি-বুমরাহরা, ঠিক সেখান খেকেই যেন শুরু করলেন এ দিন। প্রথম বল থেকেই ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যানদের বুঝিয়ে দিলেন ভারতের বোলিং অ্যাটাক ঠিক কতটা ভয়ঙ্কর। তাঁদের যোগ্য সঙ্গত দিলেন হার্দিক, কুলদীপ, চাহালরা। সেই দাপটেই মাত্র ৩৫ ওভারেই ১৪৩ রানে গুটিয়ে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। যার ফলে ক্যারিবিয়ানদের বিরুদ্ধে ১২৫ রানের বড় ব্যবধানে জয় পেল ভারত।

এ দিন টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন কোহলি। শুরুতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেস বোলারদের ধরেই খেলছিলেন রোহিত-রাহুল। কিন্তু ২৩ বলে ১৮ করে কিমার রোচের বলে আউট হন রোহিত। তারপর রাহুলের সঙ্গে পার্টনারশিপ গড়েন কোহলি। দুজনে ধীরে ধীরে রান এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। হাফ সেঞ্চুরি করার থেকে মাত্র ২ রান আগে জেসন হোল্ডারের বলে আউট হন রাহুল। ৯৮ রানে নিজেদের দ্বিতীয় উইকেট হারায় ভারত। তারপর বিরাটের সঙ্গে পার্টনারশিপ গড়েন বিজয় শঙ্কর। কিন্তু ১৪ রান করে রোহিতকে আউট করা সেই কিমার রোচের বলেই কিপারের কাছে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান শঙ্কর। কেদার যাদবও হতাশ করে মাত্র ৭ রান করে ডাগআউটে ফেরেন।
কেদার আউট হতেই পুরো দায়িত্ব এসে পড়ে বিরাট ও ধোনির উপর। ধোনি শুরুতে ধরে খেলছিলেন। কিন্তু নিজের স্বাভাবিক খেলা খেলছিলেন বিরাট। নিজের হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন বিরাট। চলতি বিশ্বকাপে পরপর চার ম্যাচে চারটি হাফসেঞ্চুরি করেন ক্যাপ্টেন কোহলি। দেখে মনে হচ্ছিল এ দিন অন্তত নিজের সেঞ্চুরি করবেন বিরাট। কিন্তু ৭২ রানের মাথায় বলের বাউন্স বুঝতে না পেরে জেসন হোল্ডারের বলে আউট হয়ে যান কোহলি।
বিরাট আউট হতে ফের রানের গতি কমে যায়। মাঠে নামেন অলরাউন্ডার হার্দিক পান্ড্য। প্রথমে ধরে খেললেও, পরের দিকে ঝোড়ো ইনিংস খেলেন হার্দিক। অর্ধশতরানের ঠিক দোরগোড়ায় এসে ছয় মারতে গিয়ে কট্রেলের বলে আউট হন হার্দিক। উইকেট স্লো হওয়ায় শট মারতে অসুবিধা হচ্ছিল। শেষ ওভারে ২ টো বিশাল ছক্কা ও ১ টি চার মেরে নিজের হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ধোনি। শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ২৬৮ রানে শেষ করে ভারত। ধোনি ৬১ বলে ৫৬ করে অপরাজিত থাকেন।

জবাবে বল করতে নেমে শুরু থেকেই আগুনে বোলিং করছিলেন ভারতের দুই পেস বলার শামি ও বুমরাহ। প্রথম ধাক্কা দেন শামি। গেইলকে ৬ ও শাই হোপকে ৫ রানের মাথায় প্যাভিলিয়নে ফেরান তিনি। তারপর সুনীল অ্যামব্রিস ও নিকোলাস কিছুটা পার্টনারশিপ গড়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু ৩১ রানের মাথায় সুনীলকে আউট করেন হার্দিক। ২৮ রানের মাথায় নিকোলাসকে আউট করেন কুলদীপ।

তারপরেই শুরু হয়ে যায় উইকেট পতনের পালা। হোল্ডার, ব্রেথওয়েট, হেটমেয়াররা এলেন আর প্যাভিলিয়নে ফিরলেন। পরপর ২ বলে ব্রেথওয়েট ও ফ্যাবিয়েন অ্যালেনকে আউট করেন বুমরাহ। কিন্তু হ্যাট্রিক আসেনি। ভারতীয় বোলারদের সামনে যেন দাঁড়াতেই পারলেন না কোনও ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যান। রীতিমতো ক্যারিবিয়ান প্লেয়ারদের ওপর বুলডোজার চালিয়ে দিল ভারতীয় বোলাররা। তাদের বোলিং দাপটেই শেষ পর্যন্ত ১৪৩ রানে শেষ হয়ে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস। ১২৫ রানের বিরাট ব্যবধানে জয় পেলেন বিরাটরা। আগের দিনের পর এ দিনও ফের চার উইকেট নিয়ে বোলারদের মধ্যে সেরা মহম্মদ শামি।
এ দিনের হারের ফলে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় হয়ে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজের। অন্যদিকে নিজেদের জয়ের ধারা বজায় রেখে পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে উঠে এলো ভারত।