হায়দ্রাবাদের নিজাম পরিবারের রাখা অর্থ নিয়েই টানাপোড়েন শুরু হয়েছে ভারত ও পাকিস্তানের। নগদ সাড়ে তিন কোটি পাউন্ড। তা নিয়েই ভারত-পাকিস্তানের আইনি লড়াই এ বার পৌঁছেছে সোজা লন্ডনের হাইকোর্টে। সময়টা ১৯৪৭ সাল। ভারত-পাকিস্তান ভাগের সময়ে হায়দ্রাবাদের সপ্তম নিজাম আশঙ্কা করেছিলেন, তাঁর বিপুল সম্পত্তি হাত ছাড়া হয়ে যেতে পারে। লন্ডনে পাকিস্তানের দূতের হাতে তখন তিনি ১০ লক্ষ পাউন্ড নগদ দিয়েছিলেন। যা ওই দূত লন্ডনের ন্যাটওয়েস্ট ব্যাঙ্কে গচ্ছিত রাখেন। সেই অর্থই এখন সুদে-আসলে সাড়ে তিন কোটি পাউন্ডে দাঁড়িয়েছে।
অর্থ নিয়ে আইনি লড়াই এই প্রথম নয়। পঞ্চাশের দশকে নিজামেরা ওই অর্থ ব্যাঙ্কের কাছ থেকে তুলে নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পাক সরকার তখনই জানিয়েছিল, পাকিস্তানের মুসলিম সম্প্রদায়কে ওই অর্থ উপহার হিসেবে দিয়েছিলেন সপ্তম নিজাম। ফলে ওই অর্থ নিজামের বংশধরেরা কখনওই দাবি করতে পারেন না। ইসলামাবাদের সেই দাবি তখন মেনে নেন হাউস অব লর্ডসের লর্ড ডেনিং। তিনিও রায় দেন যে, ওই অর্থ লন্ডনেই থাকবে।
নিজামের দুই বংশধর, যাঁরা বর্তমানে তুরস্কবাসী, অষ্টম উত্তরপুরুষ প্রিন্স মুকাররম ঝাঁ এবং মুকাররমের ভাই মুফাকাম ঝাঁ ব্রিটিশ সরকারের কাছ থেকে ওই অর্থ পেতে চাইছেন। তবে, এতে বাদ সেধেছে পাক সরকার। তাঁদের বক্তব্য, পাকিস্তানের দূতের হাতে দেওয়া ওই অর্থ পাকিস্তানকে উপহার স্বরূপ দিয়েছিলেন নিজাম। তা কোনও ভাবেই দাবি করতে পারেন না নিজামের বংশধররা, এমনটাই বক্তব্য পাক সরকারের। তবে, এই দুই ভাইয়ের পাশে দাঁড়িয়েছে ভারত সরকার। লন্ডনের রয়্যাল কোর্টস অফ জাস্টিসে এই মামলা চলছে। নিজামের উত্তরসূরিদের আইনজীবী পল হিউট জানিয়েছেন, “পাকিস্তান সরকার যতই দাবি করুক নিজামের সম্পত্তি তাঁর উত্তরসূরীদেরই প্রাপ্য। আমরা শেষ দেখে ছাড়ব।”