আচ্ছে দিনের স্বপ্ন দেখিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু আচ্ছে দিন তো আসেইনি। বরং মোদীর আমলেই প্রত্যেক দিন আরও খারাপ হয়েছে মানুষের হাল। এবার মোদীর আচ্ছে দিনের গুঁতোয় উঠেই যেতে বসেছে দীর্ঘদিন ধরে ধুঁকতে থাকা টেলিকম সংস্থা বিএসএনএল।
না কোনও জল্পনা নয়, সত্যি-সত্যিই এ বার এই আশঙ্কা দেখা দিয়েছে সংস্থাটির ঘাড়ে ঋণের বোঝা অত্যন্ত ভারী হয়ে যাওয়ায়। হ্যাঁ, কিছু দিন আগে বছরে ১০ হাজার কোটি টাকারও বেশি লাভ হত যে সংস্থার, সেই বিএসএনএলের ঘাড়ে এখন চেপে বসেছে ১৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি ঋণের বোঝা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেই বোঝাটা এতটাই ভারী যে বিএসএনএলের বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।
প্রসঙ্গত, রিলায়্যান্স জিও বাজারে আসার পরেই সরকারি ও বেসরকারি সব টেলিকম অপারেটরদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়তে শুরু করেছে গত কয়েক বছর ধরেই। তার মধ্যে বিএসএনএলের হালই সবচেয়ে খারাপ। পরিষেবা ও উন্নত প্রযুক্তির নিরিখে বিএসএনএল উত্তরোত্তর পিছিয়ে পড়তে থাকে প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে। অন্য টেলিকম অপারেটররা যখন ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক নিয়ে ভাবছে, তখন বিএসএনএল সারা দেশে ফোর-জি নেটওয়ার্ক ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টায় মরিয়া।
সংস্থার পদস্থ কর্তারা বলছেন, ঋণের বোঝায় এতটাই কাহিল হয়ে পড়েছে বিএসএনএল যে, কর্মীদের বেতন দেওয়াটাই সংস্থার চিন্তা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কর্মীদের বেতন-সমস্যা মেটাতে বিএসএনএল দ্বারস্থ হয়েছিল মোদী সরকারের। আর নিরুপায় কেন্দ্র এখন এ ব্যাপারে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কগুলির শরণাপন্ন হয়েছে। ওই ভাবে বিএসএনএল কর্মীদের শুধু জুনের বেতন মেটাতেই কেন্দ্র দিয়েছে ৮৫০ কোটি টাকা। কিন্তু আগামী কয়েক মাস সংস্থার কর্মীদের বেতন ও কাজের জন্য বিএসএনএলের তরফে কেন্দ্রের কাছে চাওয়া হয়েছে আড়াই হাজার কোটি টাকা।
বিএসএনএলের এক পদস্থ কর্তার কথায়, ‘কেন্দ্রের কাছ থেকে ওই আড়াই হাজার কোটি টাকা পাওয়া গেলে আগামী ৬ মাস অন্তত বিএসএনএলকে কোনও চিন্তা করতে হত না। কিন্তু কেন্দ্রের কাছ থেকে এ ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত কোনও আশ্বাস মেলেনি। তার উপর বিএসএনএলের কাঁধে রয়েছে ১৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি ঋণের বোঝা। যা দেখে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কগুলিও আর বিএসএনএলকে ঋণ দিতে চাইবে না বলেই মনে হয়।’
জানা গেছে, এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে নিজে থেকে খোঁজখবর নেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাই সমাধান এখনও অধরা। যেখানে কেন্দ্রের সহায়তা থাকলে আবার প্রাণ ফিরে পেত বহুদিনের এই সংস্থাটি, সেখানে মোদী সরকারের গাফিলতির কারণেই নিশ্চিহ্ন হওয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বিএসএনএল।