কর্মসংস্থান তৈরিতে আর চার-পাঁচটা রাজ্যের চেয়ে অনেক এগিয়ে বাংলা। তবে শুধু কর্মসংস্থান তৈরিতেই থেমে নেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। পাশাপাশি, শ্রমিকদের নিরাপত্তাও সুনিশ্চিত করতে উদ্যোগী রাজ্য। এই মুহূর্তে রাজ্যে অসংগঠিত শ্রমিকের সংখ্যা ১ কোটি ৪ লক্ষ ৮১ হাজার ৭৬৬। এই শ্রমিকদের সকলকেই সামাজিক সুরক্ষা যোজনায় নথিভুক্ত করা হয়েছে। রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক মঙ্গলবার বিধানসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে এ কথা জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গতকাল বিধানসভায় কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্র অসংগঠিত শ্রমিকদের সংখ্যা এবং সামাজিক সুরক্ষায় সরকার কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে তা জানতে চান। উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ‘অসংগঠিত শ্রমিকদের জন্য ভবিষ্যনিধি প্রকল্প, স্বাস্থ্য সুরক্ষা প্রকল্প, নির্মাণ শ্রমিক এবং পরিবহণ শ্রমিকদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প, বিড়ি শ্রমিকদের জন্য কল্যাণ প্রকল্প মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করে দিয়েছেন। ভবিষ্যনিধি প্রকল্পে উপভোক্তা মাসে ২৫ টাকা দেয়। রাজ্য দেয় ৩০ টাকা। কেউ অসুস্থ হলে তিনি বা তাঁর পরিবারের সদস্যরা ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত আর্থিক সহায়তা পেতে পারেন।’
তিনি আরও বলেন যে, ‘অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে উপভোক্তা ও তাঁর পরিবার সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকা বছরে পেতে পারেন। দুর্ঘটনার কারণে কর্মদিবস নষ্ট হলে উপভোক্তা প্রথম পাঁচদিনের জন্য ১ হাজার টাকা, বাকি প্রতিদিনের জন্য ১০০ টাকা করে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত পেতে পারেন। দুর্ঘটনায় কেউ মারা গেলে মৃতের পরিবার পাবে ২ লক্ষ টাকা। স্বাভাবিক মৃত্যু হলে বা দুর্ঘটনায় ৪০ শতাংশ ক্ষতি হলে ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়।’ এমনকী দৃষ্টিশক্তি হারালে, পড়াশোনার জন্য অর্থ সাহায্য করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। তিনি এ-ও জানান যে, বিড়ি শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষার যোজনা প্রকল্প নিয়ে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, গত ৭ বছরে নির্মাণ শ্রমিকদের জন্য চালু করা প্রকল্পগুলিতে এখনও পর্যন্ত আমরা ১২০৮ কোটি টাকা দিয়েছি। সেই টাকা সরাসরি শ্রমিকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চলে যায়। অনলাইন ও অফলাইন দুরকম ব্যবস্থাই রয়েছে। উপভোক্তারা প্রকল্পের সুবিধে পেতে এভাবে আবেদন করতে পারেন। রুনু দত্ত প্রকল্পে আবেদনের জন্য অনলাইনের বিষয়ে মন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘আমরা অনলাইন ছাড়াও সরাসরি ফর্ম ফিলআপের ব্যবস্থা রেখেছি। নির্দিষ্ট জায়গায় তা জমা দিতে হবে।’ আর অসিত মিত্রের প্রশ্নের জবাবে শ্রমমন্ত্রী জানান, ২০০০ থেকে ২০১১ পর্যন্ত উপভোক্তার সংখ্যা ছিল ২৬ লক্ষ ৮৪ হাজার, সেটা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৮ লক্ষে।