দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান। অবশেষে প্রোমোশন-জট কাটিয়ে উঠল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। স্বস্তির হাসি হাসলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীরা। নেপথ্যে সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এই ঘটনা হয়ে রইল যুগান্তকারী উদাহরণ। দীর্ঘকাল ধরে আটকে ছিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের প্রোমোশন। সরকার এই বিষয়ে নিয়ম জারি করলেও আটকে ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের পদোন্নতি। সেই অর্ডারগুলোই শুক্রবার কার্যকরী করল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এদিন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সিন্ডিকেট বৈঠক ডাকেন। দীর্ঘদিনের যুক্তি মেনে এক সিদ্ধান্তে উপনীত হন কর্তৃপক্ষ। তারপর উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করেন এদিন বিকেলে। তিনি সমস্ত বিষয়টি শুনে অর্ডার কার্যকরী করার নির্দেশ দেন বলে জানা গিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মচারী ইউনিয়ন সূত্রে।
বাম সরকারের আমলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী ইউনিয়নের বক্তব্য ছিল, বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বশাসিত সংস্থা। তাই নিজের নিয়মে চলবে বিশ্ববিদ্যালয়। তাই সরকার এই বিষয়ে নিয়ম জারি করলেও আটকে ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের পদোন্নতি। ১৯৮৫ সাল এবং ১৯৯০ সালে এই বিষয়ক আইন জারি হয় কেন্দ্র সরকারের তরফে। সরকারী নির্দেশ (গভর্নমেন্ট অর্ডার) নম্বর ১০৮৩ এবং ২৪২৬ অনুসারে এই প্রোমোশন কার্যকরী করাই ছিল দস্তুর। কিন্তু নিজেদের যুক্তি দেখিয়ে পদোন্নতি আটকে দিয়েছিল বামেরা। যার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক প্রাক্তন কর্মীও নিজের চাকরি জীবনে শুধুমাত্র এই কারণে পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত হয়ে এসেছেন। ফলে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের অন্দরে এই নিয়ে দীর্ঘকালীন দাবি ছিল তাঁদের পদোন্নতির থমকে থাকা প্রক্রিয়া অবিলম্বে চালু হোক।
বামেদের এমন দাবি অযৌক্তিক। সেটা সরকারে এসেই বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেছিলেন, এই দীর্ঘদিন ধরে চলা বিষয়টার খুব শীঘ্রই অবসান ঘটানো হবে। যেমন কথা তেমন কাজ। সমস্ত প্রক্রিয়া মিটিয়ে তাঁর কথামতোই প্রোমোশন হলো কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত কর্মচারীদের।
এদিন বৈঠক শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের সদস্যরা বলেন, সরকারি নিয়মানুযায়ীই সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। এতদিনকার আন্দোলন অবশেষে সফল। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। আমাদের সমস্ত যুক্তি বিবেচনার মাধ্যমে মেনে নেওয়ায় আমরা সরকারের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।