বিহারে বেড়েই চলেছে শিশু মৃত্যু। শয়ে শয়ে শিশু মৃত্যুতে উদ্বেগে বিহার প্রশাসন। মুজফফরপুরে শুক্রবার ফের ৩ শিশুর মৃত্যু হয়েছে । অ্যাকিউট এনসেফেলাইটিস সিনড্রোমে এই নিয়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ১৪১-এ। একটি সমীক্ষার রিপোর্ট বলছে বিহারের ১৮টি জেলায় মহামারির আকার নিয়েছে এই এনসেফেলাইটিস। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর খবর এসেছে মুজফফরপুর থেকে। কমপক্ষে ৮৫ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
জুনের প্রথমেই বিহারের নানা প্রান্ত থেকে একটি, দু’টি করে শিশু মৃত্যুর খবর মেলে। গত ১৭ দিনে সেটাই মহামারীর আকার নিয়েছে। চিকিৎসকরা বলছেন, শিশুরা যে রোগ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে, তার নাম- ‘অ্যাকিউট এনসেফেলাইটিস সিনড্রোম (এইএস)’। রোগাক্রান্তদের সকলেরই উপসর্গ অনেকটাই এক। রক্তে শর্করার মাত্রা তলানিতে, মস্তিষ্কে প্রদাহজনিত সমস্যা।
হাসপাতাল পরিদর্শনের গিয়েছিলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। গিয়েছিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধনও। কিন্তু মুজফফরপুরের হাসপাতালে মন্ত্রীরা পা রাখতেই ‘গো ব্যাক’ স্লোগানে গর্জে উঠেছিলেন রোগীর আত্মীয়-পরিজনরা। শুক্রবার রাজ্যসভাতেও বিহারে এনসেফেলাইটিসের কারণে গণ মৃত্যু নিয়ে আলোচনা করেন বিরোধীরা। অবিলম্বে চিকিৎসার ক্ষেত্রে সুব্যবস্থা এবং মৃতের পরিবারদের আর্থিক ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। ইতিমধ্যেই মৃতের পরিবার পিছু ইতিমধ্যেই ৪ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার।
এ ছাড়াও শুক্রবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের একটি বিশেষ দল গিয়েছিলেন মুজফফরপুরের শ্রী কৃষ্ণ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। তারা জানিয়েছে, যেহেতু পেডিয়াট্রিক ইনটেসিভ কেয়ার ইউনিটেই এনসেফেলাইটিস আক্রান্ত বাচ্চাদের সমস্ত চিকিৎসা, পরীক্ষা-নীরিক্ষা চলছে তাই বিভিন্ন টেস্ট করার জন্যযাবতীয় যন্ত্রপাতির সরঞ্জাম সেখানে থাকতে হবে। কেন্দ্রীয় দলের নির্দেশ অনুযায়ী পোর্টেবল এক্স-রে মেশিন থেকে শুরু করে অন্যান্য যন্ত্রপাতির ব্যবস্থাও এই পিআইসিইউ বিভাগেই করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
রোগের কারণ নিয়ে যেমন তৈরি হয়েছে সংশয়, তেমনি অভিযোগ উঠেছে চিকিৎসা ব্যবস্থা গাফিলতিরও। কেন এত মৃত্যু? বিশেষজ্ঞরা বলছেন ‘অ্যাকিউট এনসেফেলাইটিস সিনড্রোম,’ সরকারি সূত্র বলছে, লিচুর টক্সিন। তার থেকে ‘ব্রেন ফিভার’। স্থানীয়রা বলছেন ‘চামকি বুখার’, বিক্ষোভকারীদের দাবি, রোগের কারণ নির্ণয় তো দূরে থাক, সরকারি হাসপাতালগুলোতে পরিষেবাই অমিল। কাজেই বেড়ে চলেছে একের পর এক মৃত্যু। সেই সঙ্গে উঠে এসেছে অপুষ্টি ও তাপপ্রবাহের কারণও।