“নানা দেশ নানা মত নানা পরিধান, বিবিধের মাঝে দেখ মিলন মহান”-
ভারতে নানা ধর্মের মানুষ বসবাস করে। তবে সবসময়ে সবার মধ্যে মিলটা দেখা যায় না, অথচ সেটাই থাকা উচিৎ। ধর্মীয় বিভাজনকে ফের উস্কে দিল রাজস্থানের একটি গ্রাম। যেখানে ব্রাহ্মণ-দলিত-মুসলিম, সবার জন্যে ব্যবহৃত হয় আলাদা আলাদা কুয়ো!
রোজ বিকেল চারটে থেকে শুরু হয় লাইন দেওয়া। জল পেতে পেতে কেটে যায় রাত। কারণ দূরের একটি পুকুর থেকে জল এসে ৭০ ফুট গভীর কুয়ো ভরতে অনেকটাই সময় লাগে। তাও আবার কুয়োর অবস্থা তথৈবচ। আকারে যেমন ছোট, তেমনি মেলে না খুব একটা পরিস্কার জল। তবুও এভাবেই দিন কাটাচ্ছেন রাজস্থানের একটি গ্রামের দলিত সম্প্রদায়ের সাধারণ মানুষের দিন। তবে গ্রামে ওই একটি কুয়ো নেই। রয়েছে আরও দু’টি। অবশ্য সেগুলির অবস্থা মোটামুটি ভাল। কিন্তু সেই দু’টি কুয়ো সবাই ব্যবহার করতে পারে না। একটি গ্রামের উচ্চবর্ণ অর্থাৎ ব্রাহ্মণ, জাট, রাজপুতদের। অপরটি মুসলিমদের। আর যেটির অবস্থা সবচেয়ে খারাপ, সেই কুয়োটিই ব্যবহার করেন গ্রামের দলিত বাসিন্দারা। বাকি দু’টো কুয়ো থেকে তাঁদের জল ভরার অনুমতি নেই। তাই তো প্রায় কয়েকঘণ্টা কেটে যায় অপেক্ষা করতে করতে।
প্রতি বছর এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ওই গ্রামের দলিত মানুষদের এই কষ্ট ভোগ করতে হয়। এভাবেই কাটে তাঁদের দিন। এরকমই একজন শাহনাজ বেগম। যিনি কিনা বেওয়ারের ব্লক এডুকেশন অফিসার। তিনি নিজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছেন সবার সাথে। জানিয়েছেন কীভাবে রাত ৮ টায় কাজ থেকে ফিরেই কুয়োর সামনে গিয়ে লাইনে দাঁড়াতে হয়। আর প্রথম বালতি ভরতেই দেড় ঘণ্টা সময় লেগে যায়। তবুও এভাবেই নিজেদের লড়াই চালিয়ে যান তাঁরা।