এই বিশ্বকাপে বোধহয় সবচেয়ে সহজ ম্যাচ আজ খেলতে নামছে ভারত। ‘দ্য রোজ বোল’ স্টেডিয়ামে বিরাট কোহলিদের প্রতিপক্ষ ‘দুর্বল’ আফগানিস্তান। যারা পর পর পাঁচটি ম্যাচ হেরে রীতিমতো কোণঠাসা। তাই ক্রিকেটীয় যুক্তিতে ‘বড় ব্যবধানে’ জিতে নেট রান রেট বাড়িয়ে নেওয়ার দারুণ সুযোগ ‘টিম ইন্ডিয়া’র সামনে।
প্রতিপক্ষের নাম যেহেতু আফগানিস্তান, তাই দল নিয়ে বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা সেরে নিতে পারেন কোচ রবি শাস্ত্রী। হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটের কারণে তিনটি ম্যাচে ভুবনেশ্বর কুমারের সার্ভিস পাবে না ভারত। ভুবির জায়গায় এই ম্যাচে যশপ্রীত বুমরাহর সঙ্গী হবেন মহম্মদ সামি। দুই স্পেশালিস্ট স্পিনার হিসাবে কুলদীপ যাদব ও যুজবেন্দ্র চাহালের খেলার সম্ভাবনাই বেশি। তবে রবীন্দ্র জাদেজা পরিবর্ত ফিল্ডার হিসাবে দারুণ পারফর্ম করছেন। বেশ ভালোই ব্যাট করেন জাড্ডু। তাই কুলদীপকে বিশ্রাম দিয়ে চাহালের সঙ্গে জাদেজাকে জুড়ে দিলে মন্দ হবে না।
বুড়ো আঙুলে চোট পেয়ে শিখর ধাওয়ান বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গিয়েছেন। তাঁর জায়গায় ১৫ সদস্যের স্কোয়াডে ঢুকেছেন ঋষভ পন্থ। শনিবার কি তাঁকে খেলানো হবে? এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে। বিজয় শঙ্কর বৃহস্পতিবার নেটে ব্যাট করার সময় পায়ে চোট পেয়েছিলেন। ফলে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ঋষভের বিশ্বকাপ অভিষেক হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু শুক্রবার অনুশীলন শেষে বিজয় শঙ্কর নিজেই দাবি করেছেন, তিনি ম্যাচ ফিট। আর সেই কারণেই প্রথম একাদশে জায়গা করে নেওয়ার দৌড়ে ঋষভ কিছুটা পিছিয়ে পড়েছেন।
বিজয় শঙ্কর পাকিস্তান ম্যাচে চার নম্বরে খেলেছিলেন। বিরাট কোহলি আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন, পঞ্চাশ ওভারের খেলা হলে বিজয় তাঁর প্রথম পছন্দ। তাই আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে বিজয়কেই ফের চার নম্বরে ব্যাট করতে দেখা যেতে পারে। বল হাতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দু’টি উইকেট পেয়েছিলেন তিনি। টুর্নামেন্টের কঠিন ম্যাচগুলির কথা মাথায় রেখে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট বিজয় শঙ্করের আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর কৌশল নিতে পারে। চার নম্বরে ঋষভ ততটা সফল নন। ১৩টি ইনিংসে তিনি চার নম্বরে ব্যাট করে ২৮০ রান করেছেন। সেখানে পাঁচ নম্বরে নেমে ১৫টি ইনিংসে তাঁর সংগ্রহ ৪৯৭ রান। তবে শিখর ধাওয়ান চোটের জন্য ছিটকে যাওয়ায় টপ অর্ডার ব্যাটিংয়ে লেফট-রাইট হ্যান্ড কম্বিনেশন বজায় রাখতে ঋষভের কথা ভেবে দেখতে পারে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট।
টিম আফগানিস্তান ম্যাচে দেখে নিতে চায় ব্যাটসম্যান কেদারকেও। পাকিস্তান ম্যাচে একেবারে শেষ দিকে অল্প সময়ের জন্য ব্যাটিং পেয়েছিলেন কেদার। কখনও টপ অর্ডার ফেল করলে মিডল অর্ডারে লম্বা জুটির জন্য কেদারকে লাগবে। কিন্তু টপ অর্ডার অন্য দিনের মতো রান করে দিলে সেই সুযোগ থাকার কথা নয়। প্রথম ২৫ বা ৩০ ওভারের মধ্যে দুটো উইকেট পড়লেই কেদার আগে যেতে পারেন। কারণ, ৩৫ ওভারের পরে দুই উইকেট পড়লে পাওয়ার হিটিংয়ের জন্য হার্দিক পান্ডিয়াকে পাঠানো হবে, এটাই ঠিক হয়ে আছে। অস্ট্রেলিয়া ও পাকিস্তান, দুটো ম্যাচেই চার নম্বরে হার্দিক গিয়েছেন। গোটা ব্যাপারটা নিয়ে যতই জলঘোলা হোক, ভারত গোটা বিষয়টাকে নমনীয় রাখতে চায়। অর্থাৎ পরিস্থিতি যেমন সিদ্ধান্ত দাবি করবে,সেই মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আজ মানের তফাত হচ্ছে, অবশ্যই। আফগানিস্তানের দিশাহীন পারফরম্যান্সের জন্যই দশ টিমের লিগ ফর্ম্যাট নিয়েও প্রশ্ন উঠে গিয়েছে বিশ্বকাপে। কোনও সন্দেহ নেই, টুর্নামেন্টের সবচেয়ে সহজ ম্যাচটা আজ খেলবেন বিরাটরা। এক কথায় গালিভার বনাম লিলিপুটের লড়াই।