একজন মানুষ গুরুতর অসুখ হলে, তাঁকে হাসপাতালে রেখে চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু কারও পোষ্যের যদি এমন অবস্থা হয়, সে ক্ষেত্রে কী হবে? কেন পশুদের জন্যে হাসপাতালে শয্যা থাকবে না? এত মানুষ বাড়িতে কুকুর, বিড়াল পোষেন, তাদের জন্যে কী কিছু করা যায় না? মরফি অসুস্থ হওয়ার পর এমনই সব প্রশ্ন মনের মধ্যে ভিড় করেছিল সায়ন্তর।
সায়ন্ত ভট্টাচার্য। তাঁর পোষ্যের নাম মরফি। যখন মরফির বয়স মাত্র ৬০ দিন তখন হঠাৎ নিস্তেজ হয়ে পড়ায় মরফিকে বেলগাছিয়া পশু হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন চিকিৎসায় সাড়া দিলেও, মরফিকে তখন হাসপাতালে রেখে পরিচর্যারও প্রয়োজন ছিল। কিন্তু হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসার কোনও ব্যবস্থা ছিল না। অগত্যা মরফিকে বাড়িতেই নিয়ে আসতে হয়।
সায়ন্তবাবু সেই ঘটনা ভুলে যাননি। উল্টে, তিনি বিভিন্ন জায়গা থেকে খোঁজখবর করে কী ভাবে পশুদের চিকি়ৎসার জন্যে হাসপাতাল খোলা যায়, তার পরিকল্পনা করছিলেন। শেষ পর্যন্ত সায়ন্ত পোষ্যদের জন্যে একটি হাসপাতালও খুলে ফেলেছেন জিডি ৯৪, সল্টলেক সেক্টর-৩ এর ঠিকানায়। এই উদ্যোগে তাঁর স্ত্রী দিতি নন্দী এবং পশু চিকিৎসক অভিরূপ বন্দ্যোপাধ্যায়ও পাশে দাঁড়িয়েছেন।
সায়ন্তবাবু পোষ্যের নামেই হাসপাতালের নাম দিয়েছেন। ‘মরফি ভেটরেনারি হসপিটাল’ সবে পথ চলা শুরু করেছে। ইতিমধ্যে সল্টলেক অঞ্চলে সাড়া মিলেছে। ২৪ ঘণ্টা পরিষাবার পাশাপাশি অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের। সায়ন্তবাবুর কথায়, “হাসপাতাল শুরু হওয়ার মুখেই আমরা একটি কাঠবিড়ালিকে পরিচর্যা করে সুস্থ করে তুলেছি। আমাদের লক্ষ্য শুধুমাত্র পোষ্যদের চিকিৎসাই নয়, রাস্তার কুকুর-বিড়ালদেরও সুস্থ করে তোলা। এখানে যেমন পোষ্যদের চিকিৎসার ব্যবস্থাও রয়েছে। তেমনই কেউ যদি মনে করেন হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা করাবেন, তারও সুযোগ রয়েছে।”