বিশ্বের ৮৪ শতাংশ মানুষ মনে করেন, রোগ ঠেকাতে প্রতিষেধকের ব্যবহার যথেষ্ট কার্যকরী। কিন্তু ব্যতিক্রম ইউরোপ। হ্যাঁ, শিক্ষা-দীক্ষা এবং জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চায় তারা বিশ্বের অনেক অংশের তুলনায় এগিয়ে থাকলেও প্রতিষেধকের ওপর ভরসার নিরিখে গড়পড়তা বিশ্ববাসীর তুলনায় ঢের বেশি ‘সন্দেহপ্রবণ’ ইউরোপের দেশগুলি। এই তথ্যই উঠে এসেছে সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায়। দেখা গেছে, যেখানে গোটা বিশ্বের ৭৯ শতাংশ মানুষ মনে করেন, প্রতিষেধকের ব্যবহার নিরাপদ, সেখানে পশ্চিম ইউরোপের ক্ষেত্রে ওই পরিসংখ্যান ৫৯ শতাংশ। পূর্ব ইউরোপের ক্ষেত্রে ছবিটা আরও হতাশাজনক। সেখানে ওই পরিসংখ্যান ৫০ শতাংশ।
এ প্রসঙ্গত, লন্ডন স্কুল অফ হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের ‘ভ্যাকসিন কনফিডেন্স প্রোজেক্ট’-এর ডিরেক্টর হাইডি লারসন জানালেন, প্রতিষেধক নিয়ে এই অবিশ্বাস তৈরির পিছনে সোশ্যাল মিডিয়ার ভূমিকা রয়েছে। তাঁর মতে, আগে ব্রিটেনের পরিস্থিতি অনেকটা ভালো থাকলেও এখন যা অবস্থা তাতে সত্যি অবস্থা বেশ সঙ্কটজনক। অনেকেরই মত, সরকারি প্রতিষ্ঠানের উপর ভরসা হারানোর সঙ্গেই প্রতিষেধকের ওপর ভরসা হারানো সম্পর্ক রয়েছে। তবে লারসনের আশঙ্কা, প্রতিষেধক না নেওয়ার কুফল বুঝতে আরও অনেকটা সময় চলে যাবে।
প্রসঙ্গত, ‘ওয়েলকাম গ্লোবাল মনিটর’-এর করা ওই সমীক্ষায় ১৪০টি দেশের প্রায় ১ লক্ষ ৪০ হাজার মানুষ অংশ নিয়েছিলেন। আর তাতে উঠে এসেছে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। বিশ্বের ৮৪ শতাংশ মানুষ মনে করেন, রোগ ঠেকাতে প্রতিষেধকের ব্যবহার যথেষ্ট কার্যকরী। ৯২ শতাংশ মানুষ আবার জানিয়েছেন, তাঁদের সন্তানদের প্রতিষেধক দিয়েছেন। কিন্তু উচ্চমানের শিক্ষাব্যবস্থা ও উন্নতমানের স্বাস্থ্য পরিষেবা থাকা সত্ত্বেও ইউরোপের বহু দেশে প্রতিষেধকের ওপর ভরসা ক্রমেই কমছে। এবং এর মধ্যে শীর্ষে ফ্রান্স। সেখানে প্রতিষেধকের ওপর ভরসা ৩৩ শতাংশ। এবং বিশেষজ্ঞদের দাবি, এর জেরেই ইউরোপের একাধিক দেশে ‘মিসলস’-এর এমন হঠাৎ বাড়বাড়ন্ত। অন্যদিকে, প্রতিষেধকের ওপর ভরসা রাখার ব্যাপারে শীর্ষে রয়েছে রোয়ান্ডা ও বাংলাদেশ।