দ্বিতীয় বারের জন্য মোদী সরকার ক্ষমতায় ফিরতেই বেসরকারিকরণের পথে রেল! কারণ, রেলমন্ত্রক যে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করেছে, তাতে সেই পরিকল্পনার কথা পরিষ্কার ভাবে বলা হয়েছে৷ প্রথমত, বেসরকারিকরণের ইঙ্গিত মিলেছে রেলের জনসংযোগ বিভাগের কাজকর্মে। রেল সূত্রেও খবর, সামাজিক মাধ্যমে তাদের দৈনন্দিন জনসংযোগের প্রধান দায়িত্ব এবার পেশাদার বেসরকারি সংস্থাকে দিতে চলেছে মন্ত্রক। আর এবার কতকটা বিমানের ধাঁচে টিকিট বিক্রি এবং যাত্রী পরিষেবার অন্যান্য দায়িত্ব বেসরকারি সংস্থার হাতে ছেড়ে দিতে চাইছে তারা।
রেল বোর্ড সূত্রের খবর, দ্বিতীয় দফায় নরেন্দ্র মোদীর সরকারের প্রথম ১০০ দিনের মধ্যেই এই প্রক্রিয়া শুরুর ইঙ্গিত হিসেবে আইআরসিটিসি-র মাধ্যমে দু’টি ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা হচ্ছে। আইআরসিটিসি-র ট্রেন ভাড়া দেওয়ার পদ্ধতি অনুসরণ করেই পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি আছে, এমন গন্তব্যে নতুন ট্রেন চালিয়ে দেখা হবে। বেসরকারি সংস্থাগুলি কোন পথে কী ভাবে ট্রেন ভাড়া নিতে আগ্রহী, তা জানতে তাদের কাছে আগ্রহপত্র চাওয়া হবে। সেই নথি খতিয়ে দেখে পাইলট প্রকল্প তৈরি করবে রেল। প্রকল্পে সাড়া পাওয়া গেলে বেসরকারি সংস্থার হাতে টিকিট বিক্রি এবং অন্যান্য পরিষেবার দায়িত্ব তুলে দেওয়া হবে।
পাশাপাশি, এ-ও জানা গেছে, যে সব শাখায় ট্রেনের ভিড় কম এবং মোটামুটি ১২ ঘণ্টার মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছনো যায়, বেসরকারি উদ্যোগে সেই সব রুটে ট্রেন চালাতে চায় রেল। সকালে রওনা হয়ে সন্ধ্যায় পৌঁছনো যায় বা রাতে রওনা হয়ে সকালে পৌঁছনো যায়, এমন দূরত্বের মধ্যে থাকা পর্যটন কেন্দ্রগুলি অগ্রাধিকারের তালিকায় থাকবে। ওই সব শাখায়, বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের ধাঁচে ‘ট্রেন-সেট’ ভাড়া দিতে চাইছে রেল। তবে ট্রেন ভাড়া দেওয়ার প্রক্রিয়ায় দূর পাল্লার ট্রেনের ভবিষ্যৎ বিপন্ন হতে পারে বলে রেলের আধিকারিকদের একাংশের আশঙ্কা। বয়স্ক, অশক্ত বা মহিলাদের স্বাচ্ছন্দ্যে ঘা পড়ার আশঙ্কা করছেন কেউ কেউ।
উল্লেখ্য, মোদী সরকারের আমলে ধাপে ধাপে নিজেদের সব ছাপাখানা গুটিয়ে আনার সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছিল রেল। সারা দেশে রেলের ১৪টি ছাপাখানার মধ্যে গত বছর ন’টি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পরে বাকি পাঁচটি বড় ছাপাখানা (মুম্বই, হাওড়া, দিল্লি, চেন্নাই ও সেকেন্দরাবাদ)-ও বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল। যার ফলে শীঘ্রই বেসরকারি হাতে উঠতে চলেছে ট্রেনের টিকিট।