বুধবার স্বাস্থ্য ভবনে কলকাতার সমস্ত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যক্ষ এবং সুপারদের নিয়ে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করলেন দফতরের শীর্ষকর্তারা। বৈঠকে ছিলেন স্বাস্থ্যে নিযুক্ত নোডাল অফিসার নবিন্দর সিং, স্বাস্থ্য দপ্তরের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব রাজীব সিনহা, স্বাস্থ্য (শিক্ষা) অধিকর্তা প্রদীপ মিত্র, বিশেষ সচিব বিনোদ কুমার, সঞ্জয় বনশল–সহ একাধিক পদস্থ কর্তা। হাসপাতালের নিরাপত্তা বলয় আরও আঁটোসাঁটো করতে আলোচনা হয়৷
সব হাসপাতালের নিরাপত্তা জোরদার করার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। এবার থেকে হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও তার উন্নয়ন খতিয়ে দেখতে যৌথভাবে অডিট করা হবে। অডিটে থাকবেন স্বাস্থ্য সচিব কিংবা সচিব পর্যায়ের কোনও আধিকারিক, স্বাস্থ্যে নিযুক্ত নোডাল অফিসার নবিন্দর সিং এবং সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের সুপার বা অধ্যক্ষ। আগামী সোমবার থেকে হাসপাতালগুলিতে অডিট শুরু হওয়ার কথা।এদিকে, এনআরএস–কাণ্ডে ধৃত ৫ জনের ২৪ জুন পর্যন্ত ফের পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিল আদালত।
সব হাসপাতালের মূল প্রবেশদ্বারে পুলিশ সবকিছু যাচাই করবে কড়াহাতে। চিকিৎসকের গায়ে হাত তোলা নিয়ে রোগীদের সচেতন করতে মাইকে ঘোষণা শুরু হতে পারে।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগে রোগীর সঙ্গে দু’জনের বেশি সঙ্গী কোনও মতেই প্রবেশ করতে পারবে না। মুমূর্ষু রোগীর ক্ষেত্রে পরিস্থিতি বুঝে অতিরিক্ত একজন অনুমতি পাবেন। বহির্বিভাগে একজনই অনুমতি পাবেন। ইনডোরের ভিজিটিং আওয়ারে একজনই ওয়ার্ডে প্রবেশ করতে পারবেন। এদিন এনআরএসে জরুরি বিভাগের সামনে সবুজ টিশার্ট পরা অস্থায়ী নিরাপত্তারক্ষীরা খুব কড়াভাবে রোগী ও আত্মীয়দের প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ করছিলেন। রোগীদের অভিযোগ জানাতে গ্রিভান্স সেল থাকবে। একজন সিকিউরিটি অফিসার পুলিশ এবং বেসরকারি সংস্থার নিরাপত্তাকর্মীদের তদারকি করবেন।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, কলকাতার হাসপাতাগুলিতে একাধিক গেট রয়েছে। কিন্তু এবার থেকে রোগীদের প্রবেশ ও বেরনোর জন্য মূলত দুটি গেটই ব্যবহার করা হবে। যদিও ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে রোগীদের প্রবেশ ও বেরনোর জন্য দুটি গেটের ব্যবহার শুরু হয়ে গিয়েছে। সিসি টিভির সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। নিরাপত্তারক্ষী বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। প্রত্যেকটি হাসপাতালে অ্যালার্মের ব্যবস্থার জন্য বলা হয়। হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ি এবং স্থানীয় থানার সঙ্গে লিঙ্ক থাকবে অ্যালার্মের। হাসপাতালে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে অ্যালার্ম বাজালে থানাতেও তা বেজে উঠবে। ফলে পুলিশ দ্রুত উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে পারবে।
১০ জুন এনআরএসের চিকিৎসকদের মারধর করার ঘটনায় তারা জড়িত ছিল। সরকারি কৌঁসুলি অরূপ চক্রবর্তী বুধবার আদালতে বলেন, ৮টা বাইক আটক করা হয়েছে। ধৃতরা হল শেখ আনোয়ার, আদিল হারুন, মহম্মদ শাহনাজ, মহম্মদ ইয়াকুব ও মহম্মদ বাদল। গ্রেপ্তারের পর তাদের প্রথমবার পুলিশ হেফাজতেই রাখা হয়েছিল। প্রত্যেকটি হাসপাতালের জনসংযোগ অফিসার নিয়োগ করার বিষয়ে এদিনের বৈঠকে একটি নীতি ঠিক হলেও আজ, বৃহস্পতিবার ফের একটি বৈঠক হবে। জনসংযোগ অফিসারের কাজ কী, কোন কোন দায়িত্ব তাঁদের পালন করতে হবে প্রভৃতি বিষয়ে আজ বিস্তারিত আলোচনা হওয়ার কথা।