আজ বিশ্বকাপের লড়াইতে অষ্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হতে চলেছে বাংলাদেশ৷ পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকলেও ফিঞ্চরা চিন্তিত ‘শাকিব-কাঁটা’ নিয়ে৷ এই মূহূর্তে দুরন্ত ফর্মে শাকিব৷ আর শাকিবের সামনে এই বিশ্বকাপে এক অনন্য রেকর্ড গড়ার হাতছানি৷
বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি হয়েছে, হচ্ছে, আরও হবে। কিন্তু ডেনিস অ্যামিসকে কেউ টপকাতে পারবে না। বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথম সেঞ্চুরিয়ান বলে কথা! তেমনি মহিন্দর অমরনাথকে পেছনে ফেলাও অসম্ভব। বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথম উইকেটশিকারি তিনিই। আসলে ‘প্রথম’ হওয়ার ব্যাপারটাই অন্যরকম। ক্রিকেটে কত রকম কীর্তিই তো হয় আর সেই কীর্তিগুলোর ‘প্রথম’ কীর্তিমানের জন্য ইতিহাসে সব সময়ই জায়গা আলাদা। তেমনই এক ‘আলাদা’ জায়গা ডাকছে শাকিব আল হাসানকে।
বিশ্বকাপে আলাদা আলাদা করে হাজার রান কিংবা ন্যূনতম ৫০ উইকেটের মাইলফলক আছে কিন্তু যদি বলা হয় ন্যূনতম ১ হাজার রানের সঙ্গে ৩০ উইকেট কেউ পেয়েছেন? পাননি। অলরাউন্ডারদের ‘গ্রেটনেস’ মাপতে হিসেবটা এভাবেই কষতে হয়। বিশ্বকাপে এমন এক হিসেবেই সেরা অলরাউন্ডারদের মধ্যে সবার ওপরে উঠতে যাচ্ছেন শাকিব।
‘যাচ্ছেন’ কথাটা এভাবে বলতে বাধ্য করছেন শাকিব নিজেই। বিশ্বকাপে তাঁর অবিশ্বাস্য ফর্মের জন্য। টানা দুই সেঞ্চুরির সঙ্গে দুটি ফিফটি নিয়ে শাকিব এরই মধ্যে এই বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক। এমন দুর্দান্ত ফর্মে থাকা কেউ দলের বাকি ৪ ম্যাচে মাত্র ৭৬টি রান করতে পারবেন না! আর শাকিবের মতো কারও এই ৪ ম্যাচ থেকে ২ উইকেট তুলে নিতে না পারাও তো অবিশ্বাস্য। বিশ্বকাপের ইতিহাসে নতুন এ মাইলফলক গড়তে এ কটি রান আর উইকেট পেলেই চলবে শাকিবের।
বিশ্বকাপের ইতিহাসে ন্যূনতম ৯০০ রানের সঙ্গে ২৫ উইকেট নিতে পেরেছেন মাত্র তিনজন ক্রিকেটার। অস্ট্রেলিয়ার স্টিভ ওয়া, শ্রীলঙ্কার সনৎ জয়সূর্য ও শাকিব। এর মধ্যে প্রথম দুজন তো বেশ আগেই সাবেক। তিনটি বিশ্বকাপে (১৯৮৭, ১৯৯২ ১৯৯৬ ও ১৯৯৯) মোট ৩৩ ম্যাচ খেলে ৯৭৮ রানের সঙ্গে ২৭ উইকেট পেয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি অধিনায়ক ও মিডিয়াম পেস করে ভালোই খ্যাতি কুড়োনো ওয়া। জয়সূর্য খেলেছেন পাঁচটি (১৯৯২-২০০৭) বিশ্বকাপে ৩৮ ম্যাচ। ১১৬৫ রানে পাশাপাশি বাঁ হাতি স্পিনে পেয়েছেন ২৭ উইকেট। আর শাকিব (২০০৭-২০১৯) এ পর্যন্ত ২৫ ম্যাচ খেলেছে ২৮ উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি রান করেছেন মোট ৯২৪।
বিশ্বকাপের ইতিহাসে ন্যূনতম ১০০০ রানের সঙ্গে ৩০ উইকেট নিতে পারেনি কোনো ক্রিকেটারই। এ মাইলফলকটি গড়তে শাকিবের চাই ৭৬ রান ও ২টি উইকেট। এই রকম ফর্মে থাকলে হয়ত আজই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেই হয়ে যেতে পারে সেই নজির!
তাই আজকের এই ধুন্ধুমার লড়াইয়ে ফিঞ্চরা ‘ফেভারিট’ হিসাবে নামলেও অনেকখানি লাইমলাইট থাকবে শাকিবের ওপরেই৷ তাঁর সামনে যে এখন রেকর্ড গড়ার হাতছানি৷