এর আগে প্রথম মোদী সরকারের আমলে সেন্সর বোর্ডের মাথায় পেহেলাজ নিহালনিকে বসিয়ে ভারতীয় ছবিকে ‘সংস্কারি’ করার চেষ্টা করে ছিল মোদী সরকার। আর দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই এবার বাচ্চাদের নাচের রিয়ালিটি শো-গুলিকে ‘সংস্কারি’ করার চেষ্টায় নেমে পড়ল তারা। প্রসঙ্গত, বিভিন্ন বেসরকারি চ্যানেলের শো-এ ছোটদের নাচের ঝলক টেলিভিশনের দর্শকদের বিনোদনের অন্যতম উপাদান। এমতাবস্থায় মঙ্গলবার তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের পরামর্শ ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। সেখানে সমস্ত বেসরকারি চ্যানেলগুলিকে অনুরোধ করা হয়েছে, অশালীন, ইঙ্গিতময়, এবং বয়সের সঙ্গে সাযুজ্যপূর্ণ নয়, এমন বিষয় ছোটদের রিয়েলিটি শো থেকে এড়িয়ে চললে ভাল।
উল্লেখ্য, রিয়েলিটি শো-র মঞ্চে বিভিন্ন জনপ্রিয় সিনেমার গানের দৃশ্য হুবহু অনুকরণ করে ছোটরা। সেই বিষয়ে মন্ত্রক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এ ধরনের নাচ অনেক ক্ষেত্রেই যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ। যা ছোটদের বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে। তাই বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলিকে ১৯৯৫ সালের কেবল টেলিভিশন নেটওয়ার্কস (রেগুলেশন) আইন মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছে মন্ত্রক। সমস্ত রিয়েলিটি শোয়ের ক্ষেত্রেই অধিকতর সতর্কতার পাশাপাশি সংবেদনশীলতা বজায় রাখতে অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু অশালীনতার মাপকাঠি কী, এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন একাধিক শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ এবং বুদ্ধিজীবী মহল।
যেমন মুখ খুলেছেন, বাংলার চিত্র পরিচালক রাজ চক্রবর্তী। কেরিয়ারের শুরুতে একাধিক রিয়েলিটি শো পরিচালনা করেছেন রাজ। ছোটদের নাচের অনুষ্ঠানও পরিচালনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা তো বরাবরই সতর্ক থাকতাম, যাতে কিছু কুরুচিপূর্ণ মনে না হয়। ছোটরা তো নিজেদের নাচের দৃশ্য সোশ্যাল মিডিয়াতেও আপলোড করে। অতএব অভিভাবকেরাই ঠিক করুন না, তাঁদের সন্তানেরা কী করবে।’ এর পাশাপাশি রাজের পরামর্শ, সমস্ত চ্যানেল কর্তাদের সঙ্গে বসেই এই নিয়ে কেন্দ্র দিক নির্দেশ তৈরি করুক। আবার ছোটদের এক জনপ্রিয় রিয়েলিটি শোয়ের অন্যতম বিচারক তথা অভিনেতা অঙ্কুশও একমত রাজের সঙ্গে। তাঁর কথায়, ‘আমি মনে করি, নাচ নয়, ছোটদের অকালপক্ক হয়ে ওঠার কারণ কিন্তু অন্য। এ ধরনের অনুষ্ঠান নিয়ে বিধিনিষেধ এলে ছোটদের প্রতিভা বিকাশের পথও আটকে যাবে।’