সামনেই পুরসভা নির্বাচন। তার আগে কলকাতা এবং জেলার সব কাউন্সিলারদের নিয়ে রিভিউ মিটিং করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে এলাকার কাজ করার জন্য আরও বেশি করে উদ্যোগী হতে হবে বলেও মঙ্গলবার নজরুল মঞ্চ থেকে দলীয় কাউন্সিলারদের নির্দেশ দেন তিনি।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করে বলেন, ‘যেসব কাউন্সিলার চুরি করে ধরা পড়ছে, তারা অন্য রাজনৈতিক দলে গিয়ে নাম লেখাচ্ছে। কিন্তু তাতে বাঁচা যাবে না। তৃণমূলের কোথায় ১৫–২০ জন কাউন্সিলার বিজেপিতে চলে গিয়েছে তাতে কিছু যায় আসে না। আমি নতুন করে সব তৈরি করে দিয়েছি। তৃণমূলকে দুর্বল ভাববেন না। একজন গেলে আমি ৫০০ জন তৈরি করে দেব। চোরেদের দলে রাখব না। যাঁরা এখনও যেতে চান চলে যান, দরজা খোলা আছে। তবে হাতে–পায়ে ধরে ফেরত আসতে চাইলে নেওয়া হবে না। শুধুমাত্র পুরনো লোক ফিরতে চাইলে তাদের কেস টু কেস দেখে নেওয়া হবে।’
অন্যদিকে কাউন্সিলারদের সরাসরি নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। সমস্যার কথাও শোনেন। আর কাউন্সিলারদের সুবিধা– অসুবিধা মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে দেখে নিতে বলেন। মমতা নির্দেশ দেন, ‘অনেকে এলাকার কাজ ঠিক করে করছেন না। এলাকায় ভালভাবে কাজ না করলে দলের সুনাম নষ্ট হয়। এলাকায় যে কাজ করে সে কোনওদিন হারে না। শুধু প্রমোটিংয়ের দিকে নজর দিলে হবে না। এলাকার যত্ন নিন। ডেঙ্গির জন্য এখন থেকেই নামতে হবে। এটা উত্তর ২৪ পরগণায় বেশি হয়। হুগলীতেও কিছু কিছু খবর পাওয়া যায়। এখন থেকে মাঠে নামলে বিপত্তি আটকানো সম্ভব। তাছাড়া কারা কন্যাশ্রী পাচ্ছে না, কারা হাউজ ফর অল প্রকল্পে বাড়ি পাচ্ছে না–তা দেখুন।’ এই কাজগুলো করলেও মানুষের হৃদয়ে জায়গা পাওয়া যায় বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তাছাড়া যারা হাউজ ফর অল প্রকল্পে বাড়ি করে দেওয়ার নাম করে গরীব মানুষের কাছ থেকে ২৫ শতাংশ টাকা নিচ্ছে তাদের খবরও তিনি রাখছেন বলে জানিয়ে দেন মঞ্চ থেকে। প্রত্যেক কাউন্সিলারকে এলাকায় কাজ করতে হবে, জনসংযোগ করতে হবে বলেও নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এরপর পঞ্চায়েত এবং পুরসভা নির্বাচনের টিকিটের ক্ষেত্রে নয়া নিয়ম এনেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার থেকে জেলার নেতাদের হাতে আর টিকিট দেওয়া হবে না। প্রার্থীদেরই সরাসরি হাতে টিকিট দেওয়া হবে। কারণ জেলার নেতারা অনেকে সেই নাম কেটে দিয়ে অন্যজনকে টিকিট দিয়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মুখ্যমন্ত্রী তাই বলেন, ‘কারও কথায় টিকিট নয়। পারফরম্যান্স দেখে টিকিট দেওয়া হবে এবং তা সরাসরি দেওয়া হবে প্রার্থীকেই।’