উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে শিশুমৃত্যুর ঘটনা। সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ স্বাস্থ্য মন্ত্রক। যার ফলে এবার বিহারে কালো পতাকা দেখান হল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. হর্ষ বর্ধনকে।
প্রসঙ্গত, বিহারের মুজফফরপুরে মহামারীর আকার নেওয়া এনসেফেলাইটিসে শিশুমৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২৯। তাই রবিবার সেখানকার শ্রীকৃষ্ণ মেডিক্যাল কলেজে পরিদর্শনে দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. হর্ষ বর্ধন। শুধু ওই হাসপাতালেই গত ১৬ দিনে ৭৯টি শিশুমৃত্যু হয়েছে। এমনকী স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সামনেই এক মায়ের কোলে মৃত্যু হয় তাঁর চার বছরের শিশুর। ওই ঘটনায় জেরে আক্রান্ত শিশুদের বাবা-মা পরিজনদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি। হাসপাতালের গাফিলতি, অব্যবস্থা নিয়ে ডা. হর্ষ বর্ধনের কাছে ক্ষোভ উগরে দেন চিকিৎসাধীন শিশুদের অভিভাবকেরা।
পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে দেখে তাঁদের আশ্বস্ত করার চেষ্টায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দায়িত্বপ্রাপ্ত সবার সঙ্গে আলাদা করে কথা বলেছি। এই মারণ রোগ কী করে ঠেকানো যায় তার জন্য বিহারের প্রত্যেক মন্ত্রী, প্রত্যেক আধিকারিকের সঙ্গে আলোচনা করেছি।’ ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে চেয়ে শ্রীকৃষ্ণ মেডিক্যাল কলেজে ১০০ শয্যার পেডিয়াট্রিক ওয়ার্ড তৈরির কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। জানান, পাটনার ভায়রোলজি ল্যাবরেটরির একটি শাখা মুজফফরপুরে খোলা হবে। তবে তাঁর কথায় চিঁড়ে ভেজেনি। বরং হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে ফেরার পথে কালো পতাকা দেখানো হয় তাঁকে।
উল্লেখ্য, পাটনার শ্রীকৃষ্ণ মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে এখনও পর্যন্ত ৮৩ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ১৭ শিশু মারা গিয়েছে কেজরিওয়াল হাসপাতালে। তাদের প্রত্যেকের বয়স ১০ বছরের মধ্যে। বৈশালীতে ১২ এবং মুজফফরপুরে ১০৪ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও, মোতিহারি, পটনায় দু’জন এবং সমস্তিপুরে আরও পাঁচ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এই অবস্থায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে টুইটারে বিঁধেছে বিহারের বিরোধী দল আরজেডি। রবিবার বিশ্বকাপে ভারত পাকিস্তান হারানোর পর অমিতের টুইট ছিল, ‘পাকিস্তানে আরও একটা স্ট্রাইক!’ সেই সূত্র ধরে আরজেডির টুইট, ‘স্যর দয়া করে বিহারে এনসেফেলাইটিসের ওপর একটা স্ট্রাইক করুন।’
অন্যদিকে, গতকাল এনসেফেলাইটিসে মৃত শিশুদের পরিবারপিছু ৪ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণের কথা বলেছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। এই রোগ প্রতিরোধে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর, জেলা প্রশাসন এবং চিকিৎসকদের যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বলেছেন তিনি।