এনআরএস কান্ডের পর জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের জেরে কলকাতার হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা স্তব্ধ হয়ে যাওয়ায় রোগীরা চলে আসছেন গঙ্গার পশ্চিম পাড়ে হাওড়া জেলা হাসপাতালে। গত কয়েক দিনে জেলা হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা অনেক বেড়েছে বলে জানান চিকিৎসকরা। হাওড়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভবানী দাস বলেন, “৫ থেকে ৮% রোগী বেড়েছে হাওড়া জেলা হাসপাতালে। তাঁদের চিকিৎসা যাতে ঠিকঠাক দেওয়া যায়, সে ব্যাপারে ডাক্তাররা যথেষ্ট তৎপর”।
শুক্রবার সকালে হাওড়া জেলা হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেল, আউটডোরে অন্য দিনের মতো রোগীর ভিড়। হাসপাতাল কর্মীরা ব্যস্ত রোগীদের নামের তালিকা তৈরিতে। বিভিন্ন বিভাগের চেম্বারে রোগী দেখছেন ডাক্তাররা। উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা অমল দাস বলেন, “ক’দিন ধরে পেট ব্যথায় ভুগছি। আমি মেডিক্যাল কলেজে গিয়েছিলাম। সেখানে আউটডোর বন্ধ থাকায় এক জন আমায় জানান, জেলার হাসপাতাল খোলা। তাই এ দিন হাওড়া হাসপাতালে চলে এসেছি”। হুগলি থেকেও রোগী এসেছিলেন আউটডোরে চিকিৎসা করাতে। আনন্দ সাউ নামে এক রোগী বলেন, ‘কাগজে খবর পড়ার পর আর এনআরএসে যাওয়ার ঝুঁকি নিইনি। সরাসরি এখানে এসে হাসপাতালের আউটডোরে দেখিয়েছি।’ হাওড়া জেলা হাসপাতাল সূত্রের খবর, ইমার্জেন্সিতেও বেশ কিছু রোগী ভর্তি হয়েছেন। গ্রামীণ হাওড়ায় উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতাল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৬ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে ইএসআই হাসপাতাল। সেখানেও চিকিৎসক ও নার্সরা কাজ করছেন বুকে কালোব্যাজ পরে। হাসপাতালের চিকিৎসক প্রশান্ত মহাপাত্র বলেন, “জুনিয়র ডাক্তারদের মারধরের প্রতিবাদে কালোব্যাজ পরে মানবতার স্বার্থেই রোগীদের চিকিৎসা করছি”। বাগনান হাসপাতালের আউটডোরেও চিকিৎসা পরিষেবা ছিল স্বাভাবিক। সমস্ত বিভাগে পরিষেবা চালু রেখে প্রতিবাদে সরব হন আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরাও। বিকেলে জরুরি বিভাগের সামনে অবস্থান করেন। তাঁদের হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড। তাতে লেখা “পরিষেবার পরিবর্তে নিরাপত্তা চাই, আগে নিরাপত্তা, পরে পরিষেবা”।