এনআরএস হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তারদের বিক্ষোভের ঘটনার আঁচ ছড়িয়ে পড়েছে গোটা বাংলায়। লাগাতার কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে জুনিয়র ডাক্তাররা। শিকেয় উঠেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। এমতাবস্থায় কাল এসএসকেএম হাসপাতালে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন যে, “হাসপাতালে ঢুকেছে বহিরাগতরা৷ তাঁরাই অশান্তি বাঁধাচ্ছে৷” এর পিছনে বিশেষ রাজনৈতিক দলের হাত রয়েছে বলেও ইঙ্গিত করেন তিনি৷
এদিন মমতা আরও বলেন, “দ্রুত পরিষেবা স্বাভাবিক করতে হবে৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কমিশনার নিজে এসেছিলেন৷ যারা কাজ করবেন না, তারা হস্টেলে থাকবেন না, হস্টেল খালি করে দিন৷ যারা কাজ করবেন না, তাদের সরকার কোনও সাহায্য করবে না৷” মুখ্যমন্ত্রীর এহেন নির্দেশের পরেও জুনিয়র ডাক্তাররা তাঁদের দাবি থেকে একচুলও সরেননি।
এমন পরিস্থিতিতে দিদির বহিরাগত মন্তব্যের সুরেই সুর মেলালেন অল মেডিক্যাল কাউন্সিলের রাজ্যের সভাপতি তথা তৃণমূল নেতা নির্মল মাঝি। শুধু তাই নয়, মারধরের ঘটনায় জুনিয়র ডাক্তারদের কাঠগড়ায় তুলেছেন তিনি। সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে নির্মল মাঝি অভিযোগ করেন, “সরকারি হাসপাতালের হোস্টেলগুলিতে অবাঞ্ছিত লোক ভরে গিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এনআরএসে যে দুজন ডাক্তার নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তাঁরা বহিরাগত বলে অভিযোগ করেন নির্মল।”
নির্মল মাঝি এদিন জুনিয়র ডাক্তারদের একাধিক বিষয়ে দায়ী করে আরও বলেন,”রোগীর পরিবারের সঙ্গে অনেক সময় কথাবার্তায় সমস্যা হয়েছে। আত্মসমালোচনার প্রয়োজন আমাদের। ডোমজুড়ের রোগীর পরিবারের সঙ্গে নিয়মিত কথা হয়েছে। সেই পরিবারকেও ফেলে পেটানোর ছবি ধরা রয়েছে সিসিটিভিতে”। নির্মলবাবু কর্মবিরতিতে থাকা ডাক্তারদের মনে করিয়ে দেন যে ডাক্তাররা মানবসেবার কাজে যুক্ত থাকার শপথ নেন।
নির্মলবাবু আরও দাবি করেন, “চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের মাধ্যমে ফোনে কথা বলতে চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু ১০ মিনিট ফোন ধরে রাখার পরও সাড়া দেননি জুনিয়র ডাক্তাররা।” উল্লেখ্য, এক সাক্ষাৎকারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি সেখানকার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ওরা কথা বলতে চায়নি। সে জন্যে আমি কিছু মনেও করিনি। কারণ আমি মনে করি ওরা ছোট ছেলে। মাথা গরম অবস্থায় করে ফেলেছে। কিন্তু তা বলে যেভাবে কর্মবিরতি চালিয়ে ওরা মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে তা কখনই মেনে নেওয়া যায় না।”