বড় হয়ে চিকিৎসক হওয়াই ছিল আশৈশব লক্ষ্য। বরাবর মেধাবী ছাত্র বলে পরিচিত পরিবহ মুখোপাধ্যায় ডাক্তার হয়েওছেন। কিন্তু কখনও তিনি বা তাঁর পরিবার ভাবেননি, চিকিৎসক হওয়ার এত বড় মাসুল দিতে হবে। সোমবার রাতে মৃত এক রোগীর পরিজনের হাতে মার খেয়ে, ফ্র্যাকচার হওয়া খুলি নিয়ে মঙ্গলবার দিনভর মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়েছেন এনআরএস হাসপাতালের ইন্টার্ন পরিবহ। তবে আপাতত ভালো আছেন পরিবহ। অস্ত্রোপচারের পর উঠে বসেছেন। একটু একটু করে খাওয়া দাওয়াও করছেন। ডাক্তাররা জানিয়েছেন, আর চিন্তার কোনও কারণ নেই।
মল্লিকবাজারের ওই হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, সাড়ে তিনটের একটু আগে সেখানে ভর্তির পর থেকেই খিঁচুনি থামাতে কড়া ওষুধ প্রয়োগ শুরু হয়। তবে গুরুতর আঘাত সত্ত্বেও চেতনা হারাননি পরিবহ। স্বাস্থ্যপরীক্ষায় দেখা যায়, মাথা ছাড়া শরীরের অন্যত্র তাঁর তেমন কোনও চোট-আঘাত নেই। বিকেলের দিকে অস্ত্রোপচার করে তাঁর খুলির হাড় ও ক্ষত ঠিক করা হয়। সিটি স্ক্যানে দেখা যায়, মস্তিষ্কের কোনও অবনতি হয়নি পরিবহর। হাসপাতালের তরফে জানানো হয়, গুরুতর অসুস্থ বছর চব্বিশের ওই তরুণের অবস্থা অস্ত্রোপচারের পর স্থিতিশীল। শারীরিক অবস্থার কোনও অবনতি আর হয়নি। উঠেও বসেছেন তিনি। পরিবহ নিজে মুখেও জানিয়েছেন, ‘ভালো আছি’।
হাওড়ার ডোমজুড়ের ষষ্ঠীতলার বাসিন্দা পরিবহ অতি সাধারণ পরিবারের সন্তান। অত্যন্ত বিনয়ী ওই তরুণের বাবা অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক। মঙ্গলবার ভোর থেকেই গোটা পরিবার মল্লিকবাজারের হাসপাতালে। প্রতিবেশীরা সুপ্রিয় আদক জানান, পরিবহের মত ছেলে অযথা কোনও গন্ডগোলে জড়ানোর পাত্র নয়। অথচ আক্ষেপ, তাঁকেই এমন ঘটনার শিকার হতে হল।