দিন কয়েক আগেই যাত্রা শুরু করেছে দ্বিতীয় মোদী সরকার। কিন্তু ক্ষমতায় ফিরেই একের পর এক বিতর্কের সম্মুখীন হতে হয়েছে তাদের। জোর করে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়া এবং রেলের বেসরকারিকরণের চেষ্টা নিয়ে এমনিতেই যখন অস্বস্তিতে মোদী-শাহরা, তখনই জানা গেল শুধুমাত্র লোকসানে চলা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা নয়। এবার কেন্দ্র লাভজনক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বেসরকারিকরণ করার পথেও হাঁটতে পারে। যা নিয়ে এবার ফের বিতর্কে মোদী সরকার।
জানা গেছে, যদি সত্যিই লাভজনক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থারও বেসরকারিকরণ করে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র, তবে রাষ্ট্রীয় ইস্পাত নিগম লিমিটেড-এর নাম থাকতে পারে এই তালিকার প্রথমে। কেন্দ্রীয় সরকারের এক পদস্থ আধিকারিককে উদ্ধৃত করে ‘দ্য ইকনমিক টাইমস’ জানিয়েছে, সরকারের জন্য কৌশলগত নয়, এমন লাভজনক সংস্থাগুলির বেসরকারিকরণ করার জন্য নীতি আয়োগকে তালিকা তৈরি করতে বলা হতে পারে। তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে প্রাথমিক কথাবার্তা হয়েছে। পিএমও থেকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
সরকারের একটা মহলের বক্তব্য, এতদিন পর্যন্ত নীতি আয়োগ যে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির বিলগ্নিকরণের সুপারিশ করেছে, সেগুলি হয় মৃতপ্রায় নতুবা মূল্যহীন। চলতি অর্থ বছরে বিলগ্নিকরণ খাতে সরকারের লক্ষ্যমাত্রা ৯০,০০০ কোটি টাকা সংগ্রহ করা। এয়ার ইন্ডিয়া সহ ২৪টি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বেসরকারিকরণের অনুমোদন মিললেও একটি সংস্থাও এখনও পর্যন্ত তারা বিক্রি করতে পারেনি। এই ২৪টি সংস্থার মধ্যে রয়েছে স্কুটার্স ইন্ডিয়া, ভারত পাম্পস অ্যান্ড কমপ্রেসরস, হিন্দুস্তান নিউজপ্রিন্ট, ব্রিজ অ্যান্ড রুফ ইত্যাদি। সবথেকে বড় কথা সবগুলিই লোকসানে চলা সংস্থা।
এদিকে কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির জমি, বাড়ি সম্পত্তি বিক্রিতে সহায়তার জন্য উপদেষ্টা সংস্থার খোঁজ করছে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক। চলতি অর্থ বছরে সরকারের বিলগ্নিকরণ লক্ষ্যমাত্রা ৯০,০০০ কোটি টাকা। আন্তর্জাতিক সম্পত্তি উপদেষ্টা সংস্থা বা অন্য কারও যার বিনিময় পরামর্শদাতা পরিষেবা ক্ষেত্রে যথেষ্ট অভিজ্ঞতা রয়েছে, তাদের নথিভুক্ত করার লক্ষ্যে ‘রিকোয়েস্ট ফর এমপ্যানেলমেন্ট’ (আরএফই) বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে ডিপার্টমেন্ট অফ ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড পাবলিক অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট (ডিআইপিএএম)।
যে সমস্ত সংস্থা নথিভুক্ত হবে, তারা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার সম্পত্তি বিক্রি করে কী ভাবে অর্থ সংগৃহীত হবে, তার কৌশল নির্ধারণে ডিআইপিএএম-কে সহায়তা করবে। এছাড়া প্রত্যেকটি সম্পত্তির জন্য তারা আর্থ-প্রযুক্তি সম্ভাবনা সমীক্ষা চালাবে এবং বিনিময় সম্পূর্ণ নিশ্চিত করতে পরামর্শ দেবে। ডিআইপিএএম-এর তরফে বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলিতে সরকারি সম্পত্তির একটা বড় অংশ জমি ও বাড়ি। ওই সম্পত্তি বিক্রি করে অর্থ সংগ্রহ করার জন্য আরএফই প্রকাশিত হয়েছে।’ স্বাভাবিকভাবেই এ খবর প্রকাশ্যে আসতে নয়া বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।