‘জগনকে চাই, জগন আসবেই’ – এবার ভোটের আগে থেকেই অন্ধ্রপ্রদেশের অলিতে গলিতে বাজছিল এই গানটি। ২৩ মে ভোট গণনার দিন ইভিএম খুলতেই দেখা যায়, অন্ধ্রের মানুষের মনের কত গভীরে বসে গিয়েছিল ওই গানের কথাগুলি। আর ভোটের পূর্ণ ফল প্রকাশ হতেই স্পষ্ট হয়ে যায়, অন্ধ্রে মোদী ঝড়কে সম্পূর্ণ ভাবেই রুখে দিয়েছে জগন্মোহন রেড্ডির ওয়াইএসআর কংগ্রেস। সেখানে খাতাই খুলতে পারেনি গেরুয়া। তাই অন্ধ্রে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করতে এবার সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা ওয়াইএসআর কংগ্রেস সুপ্রিমো জগন্মোহনের দলকেই লোকসভার ডেপুটি স্পিকারের পদ দেওয়ার প্রস্তাব দিল বিজেপি।
জানা গেছে, মঙ্গলবার ওয়াইএসআর কংগ্রেসের প্রধান জগন্মোহন রেড্ডির সঙ্গে দেখা করে এই প্রস্তাব দেন বিজেপি সাংসদ তথা মুখপাত্র জিভিএল নরসিমহা রাও। প্রায় আধঘণ্টার বৈঠককে যদিও সৌজন্য সাক্ষাত্ বলে জানানো হয়েছে। তবে পরে সূত্র নিশ্চিত করে যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের প্রস্তাব নিয়েই জগনের কাছে গিয়েছিলেন রাও। লোকসভায় ২২ জন সাংসদ রয়েছে ওয়াইএসআর কংগ্রেসের।
প্রসঙ্গত, কর্ণাটক বাদে প্রায় দক্ষিণ ভারতের প্রায় কোথাওই দেখা যায়নি মোদী ঝড়। যার ফলে সেখানে বিশেষ সুবিধাও করতে পারেনি গেরুয়া শিবির। তাই দক্ষিণ ভারতে নিজেদের জমি শক্ত করতেই যে জগন্মোহনের দিকে মিত্রতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন মোদী-শাহরা, তা স্পষ্ট। তাঁর দলকে ডেপুটি স্পিকার পদ দেওয়ার এই প্রস্তাবকে কৌশলি সিদ্ধান্ত বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। আগামী ১৭ জুন লোকসভা বসার কথা। ওদিন সাংসদদের শপথগ্রহণের পরই হবে স্পিকার নির্বাচন। তাই আর দেরি না করে রাওয়ের মারফত অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রীকে বার্তা পাঠালেন মোদী-শাহরা।
উল্লেখ্য, নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দিতে ১৫ জুন দিল্লী যাচ্ছেন অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী। তবে বিজেপির দেওয়া প্রস্তাব গ্রহণ বা খারিজ করার আগে দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে দেখা করে নিতে চান জগন্মোহন। এছাড়া নিজের মুসলিম ও খ্রিস্টান ভোটব্যাঙ্কের কথাও এ ক্ষেত্রে তিনি বিবেচনা করে দেখবেন বলে মনে করা হচ্ছে। আবার বিজেপি যে অন্ধ্রে খাতা খোলার চেষ্টাতেই তাঁর দিকে মিত্রতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে সে কথাও ভাল মতোই টের পাচ্ছেন এই ঘাঘু রাজনৈতিক নেতা। তাই সব দিক বিবেচনা করেই তিনি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের।