ভারতের পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন রাজ্যে এখন চলছে প্রবল তাপপ্রবাহ। আর ২-১ দিনের মধ্যে তাপপ্রবাহ ৩০ বছরের রেকর্ড ছাড়িয়ে যেতে পারে। ইতিমধ্যে প্রবল গরমে ট্রেনের মধ্যে মারা গিয়েছেন ৪ যাত্রী। বহু জায়গায় খাল-বিল এমনকি কুয়ো পর্যন্ত শুকিয়ে গিয়েছে। গরমের হাত থেকে বাঁচতে পাহাড়ে পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে ভিড় জমিয়েছেন হাজার হাজার মানুষ।
উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসি, রাজস্থানের চুরু ও বিকানীর, হরিয়ানার হিসার ও ভিওয়ানি, পাঞ্জাবের পাতিয়ালা, মধ্যপ্রদেশের গ্বালিয়র ও ভোপালে তাপমাত্রা এখন ৪৫ ডিগ্রির বেশি। রাজধানী দিল্লিতে গত সোমবার তাপমাত্রা ছিল ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। জুন মাসে এর আগে কখনও রাজধানীতে এত গরম পড়েনি। বুধবার শহরের তাপমাত্রা ৪৫.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকালে সামান্য বৃষ্টি হওয়া সত্ত্বেও গরমের হাত থেকে রেহাই মেলেনি সেখানকার বাসিন্দাদের।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, বর্ষা আসতে এখনও দেরি আছে। তার জন্য দায়ী সাইক্লোন বায়ু। আরব সাগরে সৃষ্টি হওয়া ওই ঘূর্ণিঝড় বাতাসের জলীয় বাষ্প টেনে নিচ্ছে নিজের দিকে। আপাতত ঝড় এগিয়ে চলেছে গুজরাত উপকূলের দিকে।
এবছর এখনও পর্যন্ত তাপপ্রবাহ চলছে ৩২ দিন ধরে। আর ২ দিনের মধ্যে যদি তাপমাত্রা ব্যাপকভাবে না নেমে যায়, ২০১৯ সাল দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী তাপপ্রবাহের বছর বলে গণ্য হবে। এর আগে ১৯৮৮ সালে ৩৩ দিন তাপপ্রবাহ চলেছিল। ২০১৬ সালে তাপপ্রবাহ চলেছিল ৩২ দিন ধরে। ভারতের আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, সমতলে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং পাহাড়ে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি থাকলেই তাকে তাপপ্রবাহ বলে ধরা হয়।
কেন তাপপ্রবাহ এত দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে, তা নিয়ে রীতিমতো গবেষণা করছেন আবহাওয়াবিদরা। ভারতের আবহাওয়া দফতরের সঙ্গে যুক্ত বিজ্ঞানী ডি এস পাই বলেন, ১৯৯১ সালের পর থেকে তাপপ্রবাহের স্থায়িত্ব তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষত শেষ দুই দশকে তাপপ্রবাহ বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। বিশ্বউষ্ণায়নের ফলেই এই ধরনের ঘটনা ঘটছে, এমনটাই মনে করছেন তিনি।