এখনও দু’সপ্তাহও হয়নি যাত্রা শুরু হয়েছে দ্বিতীয় মোদী সরকারের। কিন্তু এরইমধ্যে একাধিক কারণে অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে তাদের। তার মধ্যে একটি হল গিডিপি ইস্যু। প্রসঙ্গত, ২০১১ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে প্রতি আর্থিক বছরে ভারতে মোট জাতীয় উৎপাদনের বৃদ্ধি গড়ে সাত শতাংশ হিসাবে দেখানো হয়েছে। কিন্তু সত্যিই কি সাত শতাংশ? নাকি মাত্র সাড়ে চার শতাংশ? এবার উঠছে এই প্রশ্নই। মঙ্গলবার এক সর্বভারতীয় সংবাদপত্রে প্রাক্তন প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রমনিয়ান লিখেছেন, অর্থনীতির বিকাশের হার বাড়িয়ে দেখানো হয়েছে। ২০১১-১২ থেকে ২০১৬-১৭ সালের মধ্যে দেশের আর্থিক বিকাশের হার ছিল সাড়ে চার শতাংশ। ২০১১ থেকে ’১৭-র মধ্যে ক্ষমতায় ছিল ইউপিএ ও এনডিএ সরকার। উভয়েই আর্থিক বিকাশের হার বাড়িয়ে দেখিয়েছে।
প্রসঙ্গত, অরবিন্দ সুব্রমনিয়ান ২০১৪ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত মোদী সরকারের প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ছিলেন। তাঁর বক্তব্য, ভারতের অর্থনীতিকে যদি গাড়ির সঙ্গে তুলনা করা যায়, তবে বলতে হবে তার স্পিডোমিটার খারাপ হয়ে গিয়েছে। সম্ভবত ভেঙ্গেই গিয়েছে। অবশ্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কেউ অর্থনীতির বিকাশ বাড়িয়ে দেখিয়েছে বলে তিনি মনে করেন না। প্রাক্তন প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টার বক্তব্য, আমাদের যে তথ্য দেওয়া হয়েছিল, তাতে দেখা যায়, বিশ্ব জুড়ে মন্দার পরে ভারতের অর্থনীতি দ্রুতগতিতে বিকশিত হচ্ছে। বাস্তবে আমাদের অর্থনীতি এগোচ্ছে বটে কিন্তু অত দ্রুতগতিতে নয়। দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের আমলে যে পদ্ধতিতে জিডিপি বৃদ্ধির হিসাব করা হয়েছিল, তাতে মনে হয়েছিল অর্থনীতির বিকাশ হচ্ছে খুব দ্রুত।
অর্থনৈতিক বিকাশের হার কমার ফলেই যথেষ্ট সংখ্যক চাকরির সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে না বলে মনে করেন সুব্রমনিয়ান। তিনি লিখেছেন, সাধারণ মানুষের ধারণা, অর্থনীতির বিকাশ হচ্ছে বটে কিন্তু সেই অনুযায়ী কর্মসংস্থান হচ্ছে না। এই নিয়ে অনেকের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে। বাস্তবে জিডিপি বৃদ্ধির হার কমেছে বলেই অর্থনীতির ওপরে ব্যাপক চাপ পড়ছে এবং চাকরির সুযোগও সৃষ্টি হচ্ছে না। সুব্রমনিয়ানের মতে, ভুল তথ্যের ওপরে নির্ভর করায় অর্থনীতির ক্ষতি হয়েছে। যদি জানা যেত, দেশের অর্থনীতি মাত্র সাড়ে চার শতাংশ হারে বিকশিত হচ্ছে, তাহলে সংস্কার প্রক্রিয়ায় আরও জোর দেওয়া হত। বিশেষত ব্যাঙ্কিং ও কৃষিতে সংস্কারের প্রক্রিয়া চালানো হত আরও দ্রুত হারে।